১.প্রশ্ন “দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য” প্রসঙ্গ উল্লেখ করে দৃশ্যটি বর্ণনা করো । বুড়ি কী শিক্ষা দিয়ে গেল?
আলোচ্য অংশটি নেয়া হয়েছে সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের “ভারত বর্ষ” নামাঙ্কিত গল্প থেকে । এই গল্পের শেষ অংশে দেখা যায় ভিখিরি বুড়ির মরা পিচ রাস্তায় উপরে পড়ে । তার চারপাশে বিপদমান দুই পক্ষ হিন্দু আর মুসলমান । তাদের মধ্যে প্রথমে বচসা, তারপর তর্কা-তর্কি ত্ত উত্তেজনা ।মোল্লা সাহেব আর ভটচাজ মশাইয়ের তর্জন গর্জনে সংজাতের ডাক । এইভাবে যখন চরমতর অবস্থা এবং চৌকিদার হিমশিম খেয়ে যাচ্ছে তখনই দেখা গেল এক অদ্ভুত দৃশ্য ।
অদ্ভুত দৃশ্য : দৃশ্যটা হলো পিচ রাস্তার উপর মরাটা নড়ছে। আর নড়তে নড়তে বুড়ি উঠিয়ে বসা চেষ্টা করছে । তাকে দু’পাশের জনতা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে দেখছে আর চৌকিদার দেখছে হা করে। বুড়ি উঠে বসল। সে ফ্যাক ফ্যাক করে হাসলো বিকৃত মুখে,যেন বিদ্রোপ মেশানো ধিক্কারের হাসি চৌকিদার তাকে প্রশ্ন করেছিল “বুড়িমা! তুমি মরোনি” ? । বিরক্ত বুড়ি চৌকিদার কে গালি দিয়েছিল । বুড়ি তখনই ক্ষেপে গেল তখন তারা জানতে চাইলো সে হিন্দু না মুসলমান । জবাবে বুড়ি বলে———- “চোখের মাথা খেয়েছিস মিনসেরা?………………………… যা যা পালা” তারপর নড়বড়ে পায়ে হেঁটে বুড়ি দৃষ্টির বাইরে চলে যায় ।
বুড়ির প্রদত্ত শিক্ষা : এই দৃশ্যের মাধ্যমে বুড়ি এই শিক্ষা দিয়ে গেল ধর্মের নামে মৌলবাদী ও রক্ষণশীল মানুষেরা কিভাবে মিথ্যাচারের আশ্রয় নিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষ ছড়ায় । আর ক্ষেপে ওঠা মানুষেরা সত্য না জেনে অন্ধভাবে হানাহানি করে । তাই বুড়ি জাত পাতের তথাকথিত অন্ধ ধর্ম বিশ্বাসে ঊর্ধ্বে । সে মুক্ত প্রাণের ও মনের প্রতীক । সে চোখে আঙুল দেখিয়ে দিয়ে গেল হিন্দু ও মুসলমান যেন একই বোটার দুটি ফুল এবং ভারত মাতার দুই চক্ষু ।
2.প্রশ্ন “হঠাৎ বিকেলে এক অদ্ভুত দৃশ্য দেখা গেল অদ্ভুত দৃশ্য টি কী ? এই ঘটনাকে ঘিরে দুইসম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনার ছবিটি বর্ণনা কর ?
উত্তর: আলোচ্য অংশটি নেয়া হয়েছে কথা সাহিত্যিক সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজের “ভারত বর্ষ” নামাঙ্কিত গল্প থেকে ।
অদ্ভুত দৃশ্য : বিকেলে হঠাৎ ঘটে যাওয়া অদ্ভুত দৃশ্যটি হল বাঁশে ঝোলানো বুড়ির মৃতদেহের চ্যাংদোলা মাঠ পেরিয়ে আসছে । মুসলমান পাড়ার লোকেরা মরা তুলে এনেছে । তারা মাথায় টুপি পড়ে আরবি মন্ত্র পড়ছে।
দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা : আলোচ্য গল্পে দেখা যায় বুড়ির মরা যারা নদীর চরে ফেলে এসেছিল তারা হিন্দু । তাই তাদের জিজ্ঞাসা মরা তুলে আনার ব্যাপার কী? মরা তুলে এনেছে তাদের দাবি হলো বুড়ি মুসলমান । প্রমাণ দেয়ার জন্য হাজির মোল্লা সাহেব তিনি যখন ফজর সেরে বাস ধরার জন্য বটতলায় এসেছিলেন তখন বুড়ি মারা যাচ্ছিল । মোল্লা সাহেব নিজের কানে বুড়িকে “কলমা” পড়তে শুনেছে । মোল্লা শহরে গিয়েছিল মামলার দিন ছিল বলে ।
গায়ের ভট্টাচার্য মহাশয় এমন সময় বাস থেকে নেমে সব দেখেশুনে বলেন যে, তিনিও শহরে বাস ধরার সময় বুড়িকে মরতে দেখে এবং বলতে শোনেন “শ্রী হরি” উচ্চারণ করতে । দুই ধর্মের দুই মাথার প্রমাণের সঙ্গে যোগ হয় ফজলু সেখের নিজের কানে শোনা বুড়ির উচ্চারিত “লা ইলাহা ইল্লাহ” । আর নকড়ি নাপিতের শোনা বুড়ির কণ্ঠের “হরিবোল” ধ্বনি । ফজলুর কথা শুনে নিবারণ বাগদি চেচিয়ে বলে মিথ্যে । আর পাল্টে জবাব শোনা যায় করিম ফারাজির হুমকিতে । এরপর বচসা বেড়ে যায় । চলতে থাকে তর্কা-তর্কি ও উত্তেজনা ।বুড়ির মরা তখনপিচ রাস্তায় পড়ে । গ্রাম থেকে দলে দলে মানুষ ছুটে আসতে থাকে । মোল্লা সাহেব জিহাদ ঘোষণা করে “আল্লাহু আকবার” আওয়াজ তোলেন । অন্যদিকে ভট্টাচার্য মহাশয় গর্জে উঠেন “জয় মা কালী” বলে।
এইভাবে দুই সাম্প্রদায়ের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে ।
অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে স্যার এগুলো পড়ে অনেকটা প্রশ্ন সহজ হয়ে যায়।
অসংখ্য ধন্যবাদ তোমায় এত সুন্দর কমেন্ট করার জন্য. Thank You
You will get all the suggestions when you go to college.