4TH Semester
Education GE Short Questions-Answers
Course EDU-GE-T-4
২০২২ সালের প্রশ্ন উত্তর
(Historical andsociological fundamental of education)
1. প্রশ্ন: উডের ডেসপ্যাচ এর যেকোনো দুটি গুরুত্ব লেখ ?
উত্তর: শিক্ষা ক্ষেত্রে ১৮৫৪ সালে উডের ডেসপ্যাচের ভূমিকা ছিল গুরুত্বপূর্ণ। এর দুটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো:
ক) সর্বস্তরের মানুষের জন্য শিক্ষা: উডের ডেসপ্যাচে সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্য শিক্ষা উন্মুক্ত করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল, যা শিক্ষার অধিকার প্রতিষ্ঠায় সহায়ক হয়।
খ) বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা: উডের ডেসপ্যাচে কলকাতা, বোম্বে এবং মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়, যা উচ্চশিক্ষার প্রসারে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ ছিল।
2. প্রশ্ন: বাংলায় নবজাগরণ বলতে কী বোঝো ?
উত্তর: বাংলায় নবজাগরণ বলতে উনবিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে বাংলায় সাংস্কৃতিক, সামাজিক, এবং বুদ্ধিবৃত্তিক পুনর্জাগরণের আন্দোলনকে বোঝায়। এটি বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নতি ও পরিবর্তনের সূচনা করেছিল।
3. প্রশ্ন: স্কুল গুচ্ছ কাকে বলে ?
উত্তর: স্কুল গুচ্ছ বা বিদ্যালয় গুচ্ছ হলো কয়েকটি বিদ্যালয়ের একটি সমষ্টি, যা একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে শিক্ষার মান উন্নত করা এবং বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য গঠিত হয়। এটি কোঠারি কমিশনের নির্দেশে তৈরি করা হয়।
4. প্রশ্ন: শিক্ষায় বাংলার নবজাগরণের দুটি প্রভাব লেখ ?
উত্তর: ক) আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উন্মেষ: বাংলার নবজাগরণ সময়কালে পাশ্চাত্য শিক্ষা ও ধ্যান-ধারণার প্রসার ঘটে। এর ফলে বিভিন্ন ধরনের বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তাধারার বিকাশ ঘটে, যা আধুনিক বাংলা সাহিত্যের উন্মেষে সহায়ক হয়।
খ) জাতীয়তাবাদের জাগরণ: বাংলার নবজাগরণের ফলে জাতীয়তাবাদের প্রভাব বৃদ্ধি পায়। এই জাতীয়তাবাদ পরবর্তীতে দেশের পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রশ্ন তুলে এবং স্বাধীনতা আন্দোলনের জন্য পথ প্রশস্ত করে।
5. সার্জেন্ট পরিকল্পনার (১৯৪৪) দুটি সুপারিশ লেখ ?
উত্তর: সার্জেন্ট পরিকল্পনায় উল্লেখিত মাধ্যমিক শিক্ষা-সম্পর্কিত সুপারিশের মূল উদ্দেশ্যগুলো হল:
(ক) স্বয়ংসম্পূর্ণ শিক্ষাব্যবস্থা গঠন: মাধ্যমিক শিক্ষা হবে এমন একটি স্বয়ংসম্পূর্ণ ব্যবস্থা, যার মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা সরাসরি কর্মজীবনে প্রবেশ করতে পারবে।
(খ) উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলন: ১১ থেকে ১৭ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষার ব্যবস্থা থাকবে, যা তাদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য প্রস্তুত করবে।
(গ) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা: শিক্ষার মাধ্যম হবে শিক্ষার্থীর মাতৃভাষা, তবে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে ইংরেজি পড়া আবশ্যক হবে।
***6) প্রশ্ন: সার্জেন্ট পরিকল্পনায় (১৯৪৪) উল্লেখিত প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো দুটি সুপারিশ লেখ ?
উত্তর : প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সার্জেন্ট পরিকল্পনার সুপারিশসমূহ-
(ক) সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক অবৈতনিক শিক্ষা: ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
খ) নিম্ন ও উচ্চবুনিয়াদি স্তরের বিভাজন: প্রাথমিক শিক্ষাকে দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করা।
(গ) অবৈতনিক শিক্ষা: নার্সারি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না হলেও এটি সর্বদা অবৈতনিকরূপে পরিচালিত করা।
(ঘ) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা: নার্সারি শিক্ষা অবশ্যই মাতৃভাষার মাধ্যমে হতে হবে।
7) প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে (১৯৪৮-৪৯) উল্লেখিত উচ্চ শিক্ষার দুটি উদ্দেশ্য লেখ।
উত্তর: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের (১৯৪৮-৪৯) উচ্চ শিক্ষার দুটি উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য হল:
ক) নেতৃত্ব অর্জনের যোগ্যতা অর্জন:
দেশের উন্নতির জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজবিদ, অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী ইত্যাদি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য হল এই ধরনের যোগ্য ব্যক্তিত্ব তৈরি করা, যারা সমাজের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
খ) চারিত্রিক উন্নতি সাধন:
কমিশন শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক উন্নতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এর ফলে আধুনিক সমাজ গঠন সম্ভব হবে। কমিশন তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারিত্রিক উন্নতির জন্য বিশেষ পাঠ্যসূচি ও মূল্যবোধের বিকাশের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন 8) কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) রিপোর্টের পুরো নাম কী ছিল ?
উত্তর: কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) রিপোর্টের পুরো নাম ছিল ‘শিক্ষা ও জাতীয় উন্নয়ন রিপোর্ট’ (১৯৬৪-৬৬)। এই কমিশন ‘ভারতীয় শিক্ষা কমিশন’ নামেও পরিচিত।
***9) প্রশ্ন: সার্জেন্ট পরিকল্পনায় (১৯৪৪) উল্লেখিত প্রাথমিক শিক্ষা সংক্রান্ত যেকোনো দুটি সুপারিশ লেখ ?
উত্তর : প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে সার্জেন্ট পরিকল্পনার সুপারিশসমূহ-
(ক) সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক অবৈতনিক শিক্ষা: ৬ থেকে ১৪ বছর বয়সি শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বজনীন, বাধ্যতামূলক এবং অবৈতনিক শিক্ষার ব্যবস্থা করা।
খ) নিম্ন ও উচ্চবুনিয়াদি স্তরের বিভাজন: প্রাথমিক শিক্ষাকে দুটি পর্যায়ে বিভক্ত করা।
(গ) অবৈতনিক শিক্ষা: নার্সারি শিক্ষা বাধ্যতামূলক না হলেও এটি সর্বদা অবৈতনিকরূপে পরিচালিত করা।
(ঘ) মাতৃভাষার মাধ্যমে শিক্ষা: নার্সারি শিক্ষা অবশ্যই মাতৃভাষার মাধ্যমে হতে হবে।
10) প্রশ্ন: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনে (১৯৪৮-৪৯) উল্লেখিত উচ্চ শিক্ষার দুটি উদ্দেশ্য লেখ।
উত্তর: বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষা কমিশনের (১৯৪৮-৪৯) উচ্চ শিক্ষার দুটি উল্লেখযোগ্য উদ্দেশ্য হল:
ক) নেতৃত্ব অর্জনের যোগ্যতা অর্জন:
দেশের উন্নতির জন্য প্রয়োজন উপযুক্ত রাজনীতিবিদ, শিক্ষাবিদ, সমাজবিদ, অর্থনীতিবিদ, বিজ্ঞানী ইত্যাদি। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান লক্ষ্য হল এই ধরনের যোগ্য ব্যক্তিত্ব তৈরি করা, যারা সমাজের নেতৃত্ব দিতে সক্ষম হবে।
খ) চারিত্রিক উন্নতি সাধন:
কমিশন শিক্ষার্থীদের চারিত্রিক উন্নতির ওপর গুরুত্ব দিয়েছেন। এর ফলে আধুনিক সমাজ গঠন সম্ভব হবে। কমিশন তাই বিশ্ববিদ্যালয়ে চারিত্রিক উন্নতির জন্য বিশেষ পাঠ্যসূচি ও মূল্যবোধের বিকাশের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেছেন।
প্রশ্ন 11) কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) রিপোর্টের পুরো নাম কী ছিল ?
উত্তর: কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) রিপোর্টের পুরো নাম ছিল ‘শিক্ষা ও জাতীয় উন্নয়ন রিপোর্ট’ (১৯৬৪-৬৬)। এই কমিশন ‘ভারতীয় শিক্ষা কমিশন’ নামেও পরিচিত।
8. প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের দুটি গুরুত্ব লেখো ?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ে দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নিম্নরূপ:
- কোলকাতা, পুনা, পাটনা, লাহোর, বারাণসী, আহমেদাবাদ প্রভৃতি শহরে বিদ্যাপীঠ বা জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয়। এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলি শিক্ষার প্রসারে বড় ভূমিকা পালন করে।
- শান্তিনিকেতনের ব্রহ্মচর্যাশ্রমকে এই সময় বিশ্বভারতীতে রূপান্তরিত করা হয়। এছাড়াও, ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে পেশাগত শিক্ষার প্রয়োজন মেটাতে জাতীয় মেডিকেল স্কুল, টেকনিক্যাল স্কুল এবং কলেজ, চারুকলার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, ইংরেজির পরিবর্তে হিন্দিকে সর্বভারতীয় ভাষারূপে ব্যবহৃত করা হয় এবং মাতৃভাষাকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে বজায় রাখা হয়।
- পরিকল্পনা অনুসারে ইংরাজীর পরিবর্তে সর্বভারতীয় ভাষারূপে ব্যবহৃত হল হিন্দি আর মাতৃভাষা রইল সর্বক্ষেত্রে শিক্ষার মাধ্যম।
9. প্রশ্ন: মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনে (১৯৫২-৫৩) উল্লেখিত মূল্যায়ন সংক্রান্ত যেকোনো দুটি প্রধান সুপারিশ লেখ ?
উত্তর: মুদালিয়র বা মাধ্যমিক কমিশনের সুপারিশ:
মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশনের সুপারিশগুলি হল –
ক) শিক্ষার লক্ষ্য:
মাধ্যমিক শিক্ষার লক্ষ্য কী হবে এবং সেই লক্ষ্যে কীভাবে পৌঁছানো যাবে সে বিষয়ে কমিশন সুপরামর্শ দেন।
খ) শিক্ষার পুনর্গঠন:
কমিশনে মাধ্যমিক শিক্ষার নতুন সংস্কার সাধনের মাধ্যমে পুনর্গঠন করার কৌশল নিয়ে আলোচনা করা হয় এবং সে বিষয়ে পরামর্শ দেন।
গ) শিক্ষার কাঠামো:
মুদালিয়ার কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাঠামোগত সংস্কার সাধনের সুপারিশ করেন। প্রচলিত কাঠামো ছিল ৪+৪+৩ বা ৫+৩+২। কমিশনের সুপারিশ ছিল মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো হবে ৫+৩+৩=১১ বা ৪+৪+৩=১১।
10. প্রশ্ন) অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড কি?
উত্তর: ১৯৮৬ সালের জাতীয় শিক্ষানীতির অধীনে, প্রাথমিক শিক্ষার মান উন্নয়ন এবং সাক্ষরতা অভিযানের গতি বাড়ানোর উদ্দেশ্যে অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড নামে একটি কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। এখানে ‘ব্ল্যাকবোর্ড’ শব্দটি প্রতীক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। এই শব্দটির মাধ্যমে প্রাথমিক স্তরের শিক্ষার সহায়ক সব উপকরণকে বোঝানো হয়।
11. প্রশ্ন: ECCE- এর পুরো নাম কি ?
উত্তর: ECCE এর পুরো নাম হলো “Early Childhood Care and Education”।
12. প্রশ্ন: কোঠারি কমিশন (১৯৬৪-৬৬) উল্লেখিত শিক্ষার কাঠামোটি সংক্ষেপে লেখ ?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের শিক্ষাকাঠামোতে চারটি শিক্ষান্তর উল্লেখ করা হয়েছিল। এগুলি ছিলো: (ক) প্রাক্-প্রাথমিক স্তর, (খ) প্রাথমিক স্তর-নিন্নপ্রাথমিক ও উচ্চপ্রাথমিক, (গ) মাধ্যমিক স্তর-নিন্নমাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক, এবং (ঘ) বিশ্ববিদ্যালয় স্তর-স্নাতক স্তরও স্বাতকোত্তর স্তর।
13. প্রশ্ন: সপ্ত প্রবাহ কি ?
উত্তর: মুদালিয়ার কমিশন মাধ্যমিক স্তরের পাঠক্রমে যে সুপারিশ করেন তা দুটি অংশে বিভক্ত: ক) কেন্দ্রীয় বিষয় ও খ) ঐচ্ছিক বিষয়। কমিশন এই ঐচ্ছিক বিষয়গুলিকে ৭টি মূল প্রবাহে ভাগ করেন। এই প্রবাহগুলিকেই সপ্ত প্রবাহ বলে। প্রতিটি শিক্ষার্থী এই ৭টি প্রবাহের মধ্যে একটিতে নিবন্ধন হয়। এই সপ্ত প্রবাহ হল: ১. মানবিক বিজ্ঞান, ২. বিজ্ঞান, ৩. বাণিজ্য, ৪. কারিগরি, ৫. কৃষিবিদ্যা, ৬. চারুকলা, ৭. গাহস্থ্য বিজ্ঞান।”
২০২১ সালের প্রশ্ন উত্তর
1. প্রশ্ন: মেকলে মিনিটস কি ?
উত্তর: টমাস ব্যাবিংটন এডওয়ার্ড মেকলে ছিলেন লর্ড উইলিয়াম বেন্টিঙ্কের আইন সচিব এবং ‘কমিটি অব পাবলিক ইনস্ট্রাকশন’-এর সভাপতি। ১৮৩৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তিনি প্রাচ্যশিক্ষার পরিবর্তে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রবর্তনের জন্য একটি প্রস্তাব পেশ করেন। এই প্রস্তাবটি ‘মেকলে মিনিটস’ বা ‘মেকলে মিনিট’ নামে পরিচিত।
প্রশ্ন ২: সনদ আইনের (১৮১৩) দুটি ক্রটি উল্লেখ কর ?
উত্তর: সনদ আইনের (১৮১৩) চারটি প্রধান ক্রটি হল:
- ভারতীয় সাহিত্য ও সংস্কৃতির প্রতি অবজ্ঞা: সনদ আইনে ভারতীয় সাহিত্য, পুরাণ এবং সংস্কৃতির উপেক্ষা করা হয়েছিল এবং এসব সম্পর্কে তাচ্ছিল্য প্রকাশ করা হয়েছিল।
- শিক্ষা বিস্তারে অনীহা: ভারতবাসীর শিক্ষা বিস্তারের প্রতি এই কমিশন সহানুভূতিপূর্ণ ও আগ্রহী ছিল না।
- শ্রেণী বৈষম্য: গণশিক্ষার পরিবর্তে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে শিক্ষাদানে সনদ আইন বেশি পক্ষপাতী ছিল।
- ভাষার উন্নতি রুদ্ধ: ভারতীয় ভাষা সমূহের উন্নতির ধারা ও সম্ভাবনাকে সনদ আইন রুদ্ধ করে দিয়েছিল।
***3) প্রশ্ন: স্কুল জোট কী ?
উত্তর: স্কুল জোট হল একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের সমস্ত বিদ্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতামূলক মনোভাব গড়ে তোলার এবং শিক্ষার মানোন্নয়নের উদ্দেশ্যে কোঠারি কমিশনের নির্দেশে গঠিত কয়েকটি বিদ্যালয়ের সমষ্টি। এটি শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টি করে এবং বিদ্যালয়গুলির মধ্যে অভিজ্ঞতা এবং সম্পদ ভাগাভাগি করার মাধ্যমে শিক্ষার গুণগত মান বৃদ্ধি করতে সহায়তা করে।
4. নঈ তালিম কী?
উত্তর: নঈ তালিম হলো গান্ধীজীর প্রবর্তিত ও পরিবর্তিত বুনিয়াদী শিক্ষা ব্যবস্থার পরিকল্পনা। ‘নঈ তালিম’ কথাটির অর্থ ‘নতুন শিক্ষা পরিকল্পনা’। এটি বুনিয়াদী শিক্ষারই সংস্করণ। নঈ তালিমের চারটি স্তর রয়েছে:
- পূর্ব প্রাক-বুনিয়াদী
- বুনিয়াদী শিক্ষা
- উত্তর বুনিয়াদী শিক্ষা
- বয়স্ক শিক্ষা
***5)প্রশ্ন: রাজা রামমোহন রায়ের তিনটি শিক্ষামূলক অবদানের উল্লেখ কর ?
উত্তর : রাজা রামমোহন রায়ের তিনটি শিক্ষামূলক অবদান নিম্নরূপ:
ক) 1822 সালে তিনি কলকাতায় ‘আংলো-হিন্দু স্কুল’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা প্রাচ্য ও পাশ্চাত্য শিক্ষার সমন্বয় ঘটানোর প্রয়াস ছিল।
খ) 1817 সালে কলকাতায় হিন্দু কলেজ প্রতিষ্ঠায় তিনি গুরুত্বপূর্ণ সহায়তা করেছিলেন, যা পরবর্তীতে প্রেসিডেন্সি কলেজ হিসেবে পরিচিত হয়।
গ) 1826 সালে তিনি ‘বেদান্ত কলেজ’ প্রতিষ্ঠা করেন, যা বেদান্ত শিক্ষার প্রচার ও প্রসারের উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এছাড়াও, তিনি ডেভিড হেয়ারের শিক্ষাবিস্তারের কাজে অন্যতম সহায়ক ছিলেন।
***6)প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ কর ?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দুটি বৈশিষ্ট্য হলো-
ক) দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে শিক্ষালয় স্থাপন করা।
খ) জাতীয় শিক্ষায় অর্থ সহায়তা প্রদান এবং বাংলায় জাতীয় শিক্ষার প্রসার ঘটানো।
গ) কলকাতা সহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জাতীয় বিদ্যালয় পরিষদ গঠন করা।
***7)প্রশ্ন: উডের ডেসপ্যাচ এর দুটি গুরুত্ব লেখো ?
উত্তর:
উডের ডেসপ্যাচের গুরুত্ব:
ক) সব স্তরের মানুষের জন্য শিক্ষা প্রদানের সুপারিশ করা হয়েছিল এবং কলকাতা, বোম্বে ও মাদ্রাজে বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছিল।
খ) ‘নিম্নগামী পরিস্রাবণ নীতি’ বাতিল করা হয়েছিল এবং মাতৃভাষায় শিক্ষার প্রচলন করা হয়েছিল।
গ) নিম্ন স্তরের মানুষের শিক্ষার জন্য আর্থিক সহায়তার ব্যবস্থা করা হয়েছিল এবং ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার উপর গুরুত্বারোপ করা হয়েছিল।
ঘ) নারী শিক্ষার উপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছিল।
প্রশ্ন: মুদালিয়ার কমিশন কবে এবং কোন উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল ?
উত্তর: স্বাধীনতা লাভের পর, ভারতের তৎকালীন মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা ক্রটিপূর্ণ ছিল। 1951 সালে, কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা পরিষদ দেশের প্রচলিত মাধ্যমিক শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ব্যাপক অনুসন্ধান ও পর্যালোচনা করে। এর প্রেক্ষিতে, মাধ্যমিক শিক্ষা সংস্কারের জন্য একটি কমিশন গঠন করার প্রস্তাব করা হয়েছিল।
Important প্রশ্ন -উত্তর
1) প্রশ্ন: স্কুল গুচ্ছ বা স্কুল জোট বা বিদ্যালয় গুচ্ছের মূল উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী বিদ্যালয় গুচ্ছের ধারণা প্রস্তাব করা হয়েছিল। এই পরিকল্পনায় তিন থেকে চারটি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দশ থেকে কুড়িটি নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয় একত্রিত হয়ে একটি বিদ্যালয় গুচ্ছ গঠন করবে। এই গুচ্ছের মূল উদ্দেশ্য হলো বিদ্যালয়গুলির মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব তৈরি করা।
2. প্রশ্ন: স্কুলগুচ্ছ বা জোট কী?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের প্রস্তাব অনুসারে, একই অঞ্চলে অবস্থিত কিছু সংখ্যক স্কুলকে একত্র করে একটি জোট বা গুচ্ছ গড়ে তোলার কথা বলা হয়। এই ধরনের স্কুলগুচ্ছের অন্তর্ভুক্ত থাকত নিন্নপ্রাথমিক, উচ্চপ্রাথমিক, এবং মাধ্যমিক স্কুল।
3)প্রশ্ন: কোঠারি কমিশনের দুটি উদ্দেশ্য লিখুন?
উত্তর: 1. কমিশন নারী শিক্ষার উন্নয়নের কৌশল এবং লক্ষ্য নির্ধারণে পরামর্শ দিয়েছে।
2. মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষার প্রসার: মেয়েদের শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করতে আলাদা স্কুল প্রতিষ্ঠা, হোস্টেল সুবিধা, বৃত্তি এবং বৃত্তিমূলক কোর্সের মতো সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
4) প্রশ্ন: কোঠারি কমিশনের মূল দুটি সুপারিশ লেখ ?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের প্রধান সুপারিশগুলির মধ্যে রয়েছে:
ক) শিক্ষার সর্বজনীনীকরণ: কোঠারি কমিশন ১৪ বছর পর্যন্ত সকল শিশুকে বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদানের উপর জোর দিয়েছে।
খ) সমান শিক্ষা সুযোগ: কমিশন একটি সাধারণ স্কুল ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছে, যা সামাজিক বা অর্থনৈতিক পটভূমি নির্বিশেষে সকল শিশুকে সমান সুযোগ প্রদান করে শিক্ষার বৈষম্য দূর করবে।
গ) পাঠ্যক্রম সংস্কার: কমিশন একটি নমনীয় এবং সমন্বিত পাঠ্যক্রমের আহ্বান জানিয়েছে যা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশকে উন্নীত করবে এবং তাদের প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও জ্ঞান প্রদান করবে।
প্রশ্ন ৫: কোঠারি কমিশনের ব্যর্থতার দুটি কারণ লিখুন ?
উত্তর: ক) বিদ্যালয়ের প্রধানদের অবস্থান নিয়ে কমিশন অস্পষ্টতা রেখেছে, যা শিক্ষার পরিচালনায় সমস্যার সৃষ্টি করেছে। খ) কমিশন সংস্কৃত ভাষাকে আরবি ভাষার সমতুল্য করে দেখার মাধ্যমে ভুল করেছে, যা অনেকের কাছে সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ) শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কিত কমিশনের মতামত শুধুমাত্র বিতর্কিতই ছিল না, তা বিভ্রান্তিকরও ছিল।
প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ের দুটো গুরুত্ব লেখ ?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের প্রথম পর্যায়ের দুটো গুরুত্ব:
ক) মাতৃভাষার প্রাধান্য: জাতীয় শিক্ষায় মাতৃভাষাকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে মাতৃভাষা ব্যবহার করা হয় এবং ইংরেজিকে দ্বিতীয় ভাষা হিসেবে আবশ্যিক করা হয়েছে।
খ) সমন্বিত বিদ্যাচর্চা: এই পর্যায়ে বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা, কলা, সংস্কৃতি ও মানবিক বিদ্যাচর্চার সুযোগ ছিল। এছাড়াও, শিক্ষার্থীর চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য নীতি ধর্ম ও শারীর শিক্ষার ব্যবস্থা ছিল।
08) প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের দ্বিতীয় পর্যায়ের দুটি সীমাবদ্ধতা বা ব্যর্থতার কারণ লেখ ?
উত্তর: ক) ১৯২১-২২ খ্রীষ্টাব্দে, ভারতবর্ষে ১২২৭টি জাতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছাত্র সংখ্যা ছিল ৭৮৫৮১ জন, যা সরকারের অনুমোদিত স্কুল, কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংখ্যার তুলনায় কম ছিল। এই কারণে সরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর ছাত্র সংখ্যা হ্রাস পেতে থাকে।
খ) দ্বিতীয় পর্যায়ের এই আন্দোলন সুপরিকল্পিত, যুক্তিযুক্ত, সুচিন্তিত এবং সর্বভারতীয় হওয়া সত্ত্বেও কিছু সীমাবদ্ধতা ছিল। যেমন, মুসলিমদের অংশগ্রহণ ছিল উল্লেখযোগ্য হলেও তাদের জন্য আরও কার্যকরী উদ্যোগের অভাব ছিল।
গ) সর্বভারতীয় স্তরে ইংরেজির পরিবর্তে একটি জাতীয় ভাষা প্রবর্তনের জন্য ব্যাপক উৎসাহ দেখা গেলেও, ভাষার প্রশ্নে সর্বসম্মতি না থাকায় আন্দোলন কিছুটা ব্যাহত হয়।
ঘ) শিক্ষার মান ও পদ্ধতির ক্ষেত্রে সকলের মধ্যে একমত না হওয়ায় এই আন্দোলন কার্যকরভাবে পরিচালিত হতে পারেনি।
প্রশ্ন ৯: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায়ের দুটি গুরুত্ব, সাফল্য বা উদ্দেশ্য লেখ ?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষা আন্দোলনের তৃতীয় পর্যায়ের দুটি গুরুত্বপূর্ণ দিক, সাফল্য বা উদ্দেশ্য হলো:
ক) সমগ্র দেশের শিক্ষার্থীদের জন্য ৭ বছর ব্যাপী প্রাথমিক শিক্ষা বিনামূল্যে দেওয়া হবে, এবং এই শিক্ষা বাধ্যতামূলক করা হবে।
খ) এই শিক্ষার মাধ্যম হবে মাতৃভাষা বা আঞ্চলিক ভাষা।
গ) এই শিক্ষা সম্পূর্ণভাবে উৎপাদনধর্মী হাতের কাজকে কেন্দ্র করে দেওয়া হবে, এবং এই হাতের কাজটি শিক্ষার্থীদের পরিবেশ বিবেচনা করে নির্ধারণ করা হবে।
১০) প্রশ্ন: মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন কবে, কার সভাপতিত্বে কি নামে গঠন করা হয়?
উত্তর: স্বাধীন ভারতের মাধ্যমিক শিক্ষা পুনর্গঠনের জন্য সরকারের কাছে একটি সর্বভারতীয় কমিশন গঠন করার প্রস্তাব করেন। এই প্রস্তাব অনুযায়ী, সরকার মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর লক্ষণ স্বামী মুদালিয়ারের সভাপতিত্বে ১৯৫২ সালে ২৩ শে সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন (১৯৫২-৫৩) গঠন করেন।
11)প্রশ্ন: মাধ্যমিক কমিশনের বা মুদালিয়ার কমিশনের সদস্য সংখ্যা কত ছিল? যেকোনো দুজন সদস্যের নাম লেখ?
উত্তর: ১৯৫২ সালের ২৩ শে সেপ্টেম্বরে মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন গঠিত হয়। এতে মোট ৯ জন সদস্য ছিলেন, যেখানে ৭ জন ভারতীয় এবং ২ জন বিদেশি ছিলেন। ভারতীয় সদস্যদের মধ্যে ছিলেন: ডক্টর লক্ষণ স্বামী মুদালিয়র (সভাপতি), অনাথ নাথ বসু (সম্পাদক), শ্রীমতি হংসরাজ মেহেতা (সদস্য), এবং কে. এল. শ্রীমালী (সদস্য)। বিদেশি সদস্যদের মধ্যে ছিলেন: জন ক্রিস্টি (ইংল্যান্ড) এবং কে. আর. উইলিয়াম (আমেরিকা)।
12) প্রশ্ন: মুদালিয়র কমিশন বা মাধ্যমিক কমিশনের শিক্ষা কাঠামোটি লেখ?
উত্তর: শিক্ষার কাঠামো: মুদালিয়ার কমিশন মাধ্যমিক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য কাঠামোগত সংস্কার সাধনের সুপারিশ করেন। প্রচলিত কাঠামো ছিল ৪+৪+৩ বা ৫+৩+২। কমিশনের সুপারিশ হল মাধ্যমিক শিক্ষার কাঠামো হবে ৫+৩+৩-১১ বা ৪+৪+৩-১১।
13) প্রশ্ন: মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন বা মুদালিয়ার কমিশন ভাষা নীতি সম্পর্কে কি সুপারিশ করে ?
উত্তর: ভাষা শিক্ষা কমিশন ত্রিভাষিক মডেলে পরামর্শ দেয়েছেন। এটি অর্থ হাজার বিভাগী বা মাতৃভাষার, হিন্দি এবং ইংরেজির মধ্যে সমন্বয় করে।
১৪) প্রশ্ন: মুদালিয়ার কমিশন বা মাধ্যমিক কমিশন পরীক্ষা ব্যবস্থা এবং মূল্যায়নের সম্পর্কে আপনি কী পরামর্শ দেন?
উত্তর: পরীক্ষা ব্যবস্থায়, কমিশন মাধ্যমিক স্তরে পরীক্ষার বিত্তি সংস্কার করা উচিত। রচনামুখী পরীক্ষার পরিবর্তে বস্তুমুখী পরীক্ষা বোধগম্য হতে হবে। মূল্যায়নে, কমিশন গ্রেড প্রদান করার জন্য নম্বর পরিবর্তে গ্রেড ব্যবহার করা উচিত। উদাহরণস্বরূপে, সর্বাধিক ১৮০ নম্বরের জন্য A+ গ্রেড প্রদান করা উচিত।
১৫ প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষানীতির দুটি গুরত্বপূর্ণ কর্মসূচি উল্লেখ কর ?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষানীতির একটি মুখ্য লক্ষ্য হল শিক্ষার মাধ্যমে দেশের শিক্ষার মান এবং অভিজ্ঞতা উন্নত করা। ১৯৮৬ সালে এই নীতির অধীনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচির মধ্যে অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড ও নবোদয় বিদ্যালয় গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হতে উল্লেখযোগ্য।”
****১6)প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষানীতিতে গৃহীত অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড কর্মসূচি গ্রহণের দুটি কারণ লেখ?
উত্তর : আমাদের দেশে অনেক প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে যেগুলিতে-(১) বিদ্যালয়ের গৃহ নেই, (২) শিক্ষক-শিক্ষিকার অভাব, (৩) ন্যুনতম শিক্ষা উপকরণ নেই, (৪) বিদ্যালয়ে বাথরুম নেই, (৫) পানীয় জলের ব্যবস্থা নেই, (৬) প্রয়োজনের তুলনায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সংখ্যা খুব কম, (৭) মেয়েদের জন্য বিশেষ সুযোগ সুবিধা নেই। এই সমস্যাগুলির জন্য অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
**17)প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষানীতিতে অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড কর্মসূচি গ্রহণের দুটি উদ্দেশ্য বা গুরুত্ব লেখ?
উত্তর : অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড কর্মসূচি গ্রহণের উদ্দেশ্য
(ক) মান উন্নয়ন: প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলির মান উন্নয়ন করা।
(খ) উপযুক্ত পরিকাঠামো: প্রয়োজনীয় ক্লাসরুম তৈরি, বসার সুবন্দোবস্ত, শৌচাগার নির্মাণ, পানীয় জলের ব্যবস্থা,প্রয়োজনীয় শিক্ষক-শিক্ষিকা ব্যবস্থা রাখা।
(গ) শিক্ষা সহায়ক উপকরণ : শিক্ষণ পদ্ধতিকে অধিকতর আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য শিক্ষা সহায়ক বিভিন্ন উপকরণ যথা- চার্ট, মডেল, চক প্রভৃতি সরবরাহ করা।
18) প্রশ্ন: অপারেশন ব্লাকবোর্ড কাকে বলা হয়?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষানীতি (১৯৮৬ খ্রি.)-র একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশ হল অপারেশন ব্লাকবোর্ড কর্মসূচী। এটি জাতীয় শিক্ষানীতিতে (১৯৮৬ খ্রি.) উন্নয়নের জন্য প্রাথমিক শিক্ষার মান বাড়াতে একটি পরিকল্পনা বা কার্যক্রম যা ব্লাকবোর্ড শব্দের মাধ্যমে প্রতীকিত হয়। এটি প্রাথমিক শিক্ষার উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষাসহায়ক সমস্ত উপাদান বোঝানোর জন্য ব্যবহৃত হয়। এই প্রকল্পটির নাম হল ‘অপারেশন ব্লাকবোর্ড’।
১৯. প্রশ্ন: 1986 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচি গ্রহণের দুটি উদ্দেশ্য লেখ?
উত্তর: 1986 সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচি গ্রহণের দুটি উদ্দেশ্য হলো: প্রথমত, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের জন্য আদর্শ স্কুল বা নবোদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়। এবং দ্বিতীয়ত, গ্রামের প্রতিভাসম্পন্ন শিক্ষার্থীদের উন্নতমানের মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ প্রদান করে তাদেরকে সামাজিক ন্যায়ে প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা করা হয়।
***20)প্রশ্ন: নবোদয় বিদ্যালয় কী?
উত্তর: নবোদয় বিদ্যালয় হল এমন স্কুল যা দেশের মেধাসম্পন্ন শিশুদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করে, তাদেরকে মাধ্যমিক শিক্ষার সাথে সংখ্যাগত মানেও সুষ্ঠু প্রশিক্ষণ দেওয়ার মূল উদ্দেশ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। এই ধরনের বিদ্যালয়গুলি জাতীয় শিক্ষানীতি, ১৯৮৬ এর মত বিদ্যমান শিক্ষার উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়।
21) প্রশ্ন: নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচি গ্রহণের দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ ?
অথবা
জাতীয় শিক্ষানীতিতে গৃহীত নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচির দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ ?
উত্তর:
- ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা: নবোদয় বিদ্যালয়গুলিতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষাদানের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে।
- ভর্তি পরীক্ষা ব্যবস্থা: নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে উন্নত মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে। প্রতি বছরে এই পরীক্ষা হবে।
- আবাসিক ও অবৈতনিক: নবোদয় বিদ্যালয়গুলি আবাসিক এবং অবৈতনিক হবে। শিক্ষার সমস্ত ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। এছাড়া পোশাক-পরিচ্ছদ ও খাওয়ার খরচও সরকার থেকে দেওয়া হবে।
22. প্রশ্ন: ‘প্রাক শৈশবে শিশুর প্রতি যত্ন ও শিক্ষা’ এই কর্মসূচি গ্রহণের দুটি লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য লেখ ?
উত্তর: ক) প্রারম্ভিক শৈশব যত্ন এবং শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো শিশুর পূর্ণ সম্ভাবনার সর্বোত্তম বিকাশকে সহজতর করা এবং সর্বাঙ্গীণ বিকাশ ও জীবনব্যাপী শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করা।
খ) এই কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে যাতে শিশুর পুষ্টি, স্বাস্থ্য, মানসিক, সামাজিক, প্রাক্ষোভিক, নৈতিক প্রভৃতি দিকগুলির যথাযথ বিকাশ নিশ্চিত করা যায়।
২৩. প্রশ্ন : প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার দুটি উদ্দেশ্য বা লক্ষ বা গুরুত্ব লেখো ?
উত্তর: ক) প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার মূল লক্ষ্য হলো শিশুর সামাজিক, মানসিক, শারীরিক এবং জ্ঞানীয় দক্ষতার বিকাশ সাধন করা। খ) এটি শিশুদের স্বাধীন এবং আত্মবিশ্বাসী হতে সাহায্য করে, যা তাদের ভবিষ্যতের শিক্ষা ও জীবনের জন্য প্রস্তুত করে তোলে। গ) যদিও বিভিন্ন দেশে প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য ভিন্ন হতে পারে, সাধারণত এর প্রধান লক্ষ্য হলো শিশুদের প্রাথমিক বিদ্যালয়ের জন্য প্রস্তুত করা।
24.প্রশ্ন: সনদ আইনের দুটি গুরুত্ব বা সুপারিশ লেখো ?
উত্তর: ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট (সনদ আইন) ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। এর দুটি প্রধান গুরুত্ব হলো:
ক) শিক্ষা বিস্তারে মিশনারিদের পূর্ণ স্বাধীনতা: সনদ আইনের মাধ্যমে মিশনারিরা শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পান। এর ফলে শিক্ষায় ধর্মীয় বিষয়ের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়, এবং স্বাধীনভাবে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, পুস্তক প্রকাশ, নারী শিক্ষার প্রসার, ও অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠার মত কাজ শুরু হয়।
খ) ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার উদ্যোগ: মিশনারিদের এই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার উদ্যোগকে বহু গুণীজন সমর্থন করেছিলেন, যা শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
প্রশ্ন ২৫: শিক্ষাক্ষেত্রে ‘ড্রপ আউট’ বলতে কী বোঝো? অথবা, বিদ্যালয় ছুট কাকে বলে?
উত্তর: নির্দিষ্ট বয়সে শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে ভর্তি হলেও, বিভিন্ন অর্থনৈতিক, সামাজিক ও পারিবারিক সমস্যার কারণে, যেমন দারিদ্র্য, অবহেলা, বা অন্য কোনো বাধা, তারা পড়াশোনা চালিয়ে যেতে পারে না এবং স্কুল ছেড়ে দেয়। এর ফলে তারা ধারাবাহিক শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। এই ধরনের শিক্ষার্থীদের বলা হয় বিদ্যালয় ছুট বা ড্রপ আউট।
২৬ প্রশ্ন: ভারতে ইংরেজি শিক্ষার ‘ম্যাগনাকার্টা’ বলতে কী বোঝায়? (২০২৩) অথবা
‘ম্যাগনা কার্টা’ আসলে কি?
উত্তর: ভারতে ইংরেজি শিক্ষার ক্ষেত্রে ‘ম্যাগনা কার্টা’ বলতে উডের ডেসপ্যাচকে বোঝানো হয়। চার্লস উড ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নিয়ন্ত্রণ বোর্ডের সভাপতি ছিলেন এবং তার ডেসপ্যাচের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয়দের পাশ্চাত্য জ্ঞান ও সংস্কৃতি সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করা।
২৭ প্রশ্ন: ইয়ং বেঙ্গল মুভমেন্ট বা নব্য বঙ্গ আন্দোলন বলতে কী বোঝায়? (২০২৩)
উত্তর: উনিশ শতকের বাংলায় নবজাগরণের অন্যতম প্রধান ব্যক্তি ছিলেন হেনরি লুইস ভিভিয়ান ডিরোজিও (১৮০৯-১৮৩১)। তার নেতৃত্বে বাংলায় এক উগ্র সংস্কারবাদী আন্দোলনের সূচনা হয়, যা নব্য বঙ্গ আন্দোলন নামে পরিচিত।
২৮ প্রশ্ন: শিক্ষায় ‘টুইয়ে পড়া নীতি’ বা ‘ফিন্ট্রেশন তত্ত্ব’ বা ‘ডাউনওয়ার্ড ফিলট্রেশন থিওরি’ বলতে কী বোঝো? (২০২৩)
উত্তর: টমাস ব্যাবিংটন মেকলে যে শিক্ষানীতি প্রবর্তন করতে চেয়েছিলেন, তা ‘টুইয়ে পড়া নীতি’ বা ‘ফিলট্রেশন থিওরি’ নামে খ্যাত। মেকলে চেয়েছিলেন ভারতীয় উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করতে। তার উদ্দেশ্য ছিল এই শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের রক্তের দিক থেকে ভারতীয় রেখে রুচি, ভাবধারা, ও মতাদর্শে ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করা। তার ধারণা ছিল, এই শিক্ষাধারা স্বাভাবিকভাবে নিম্নস্তরে নেমে আসবে এবং জনসাধারণের মধ্যে শিক্ষার বিস্তার ঘটবে। তাই, সমসাময়িক কালে, জনসাধারণের শিক্ষার ব্যাপকতা অর্জনের পরিবর্তে ক্রমশ নিম্নস্তরে শিক্ষার বিস্তার ঘটানোর নীতি গ্রহণ করাই ছিল সরকারের প্রধান দায়িত্ব।
২৯ প্রশ্ন: ১৮৩৫ সালের মেকলে মিনিট কী?
উত্তর: বড় লাট লর্ড বেন্টিকের শাসনামলে (১৮২৮-৩৫ খ্রি) কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি এবং উগ্র পাশ্চাত্যবাদী থমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য ১৮৩৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বড় লাটের কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেন, যা ‘মেকলে মিনিট’ বা ‘মেকলের প্রস্তাব’ নামে পরিচিত।
29 প্রশ্ন: ব্রাহ্মসমাজ বলতে কী বোঝো? (২০২৩)
উত্তর: ব্রাহ্মসমাজ বা ব্রাম্মসভা হল উনবিংশ শতাব্দীতে বাংলায় গড়ে ওঠা একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক ও ধর্মীয় আন্দোলন, যা বাংলার পুনর্জাগরণের অন্যতম অগ্রদূত হিসেবে পরিচিত। এই আন্দোলনের সূচনা হয় ২০ আগস্ট, ১৮২৮ সালে (৬ ভাদ্র ১২৩৫ বঙ্গাব্দ) কলকাতায়, যখন হিন্দুধর্ম সংস্কারক রাজা রামমোহন রায় (১৭৭২-১৮৩৩) ও তার বন্ধুরা মিলে এক সার্বজনীন উপাসনা অনুষ্ঠানের মাধ্যমে ব্রাহ্মসমাজ প্রতিষ্ঠা করেন।
৩১) প্রশ্ন: কারিগরি শিক্ষা কী?
উত্তর: কারিগরি শিক্ষা হল এমন একটি শিক্ষা ব্যবস্থা যা শিক্ষার্থীদেরকে শিল্প ও কারখানার পরিবেশের সাথে পরিচিত করায় এবং প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহারে তাদেরকে দক্ষ করে তোলে।
৩২. প্রশ্ন: বৃত্তিমূলক শিক্ষা কী?
উত্তর: বৃত্তিমূলক শিক্ষা হলো এমন একটি শিক্ষা পদ্ধতি যা ব্যক্তির নিজস্ব ক্ষমতা ও চাহিদা অনুযায়ী একটি নির্দিষ্ট পেশা বা বৃত্তি গ্রহণে সহায়তা করে। এটি ব্যক্তিকে তার কর্মজীবনে দক্ষ হতে এবং স্বনির্ভর হতে প্রস্তুত করে।
৩৩) প্রশ্ন: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান কী?
উত্তর: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান হল একটি পদ্ধতি, যেখানে সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ও বোধের বিকাশ ঘটায়। সমাজ এবং ব্যক্তির এই পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়সূচি ও বিষয়জ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান নামে পরিচিত।
৩৪) প্রশ্ন: শিক্ষার সমাজতত্ত্ব বলতে কী বোঝো?
উত্তর: শিক্ষার সমাজতত্ত্ব হলো সেই প্রক্রিয়া যেখানে সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি পরস্পরের সঙ্গে বোঝাপড়া করে জ্ঞান অর্জন করে এবং সেই জ্ঞানের মাধ্যমে তাদের মানসিক বিকাশ ঘটে। এই প্রক্রিয়ার মাধ্যমে সমাজ এবং ব্যক্তির মধ্যে একটি নির্দিষ্ট বিষয়সূচি ও বিষয়জ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা শিক্ষার সমাজতত্ত্ব নামে পরিচিত।
৩৫) প্রশ্ন: সংস্কৃতি বলতে কি বোঝায়?
উত্তর: সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা, যেখানে মানুষের জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার-আচরণ এবং অন্যান্য সামাজিক অভ্যাস অন্তর্ভুক্ত থাকে। এই সমস্ত উপাদান একজন ব্যক্তি সমাজের সদস্য হিসেবে অর্জন করে।
৩৬) প্রশ্ন: সামাজিক গোষ্ঠী কী?
উত্তর: সামাজিক গোষ্ঠী হল এমন একদল মানুষ, যারা পরস্পরের সঙ্গে ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া করে এবং একটি স্বীকৃত সংগঠন গঠন করে। যখন একাধিক ব্যক্তি একই উদ্দেশ্যে একত্রিত হয় এবং একে অন্যের প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে সাধারণ দায়বদ্ধতা নিয়ে কাজ করে, তখন তাকে সামাজিক গোষ্ঠী বলা হয়।
৩৭) প্রশ্ন: প্রাথমিক গোষ্ঠীর দুটি উদাহরণ উল্লেখ করো?
উত্তর: পরিবার এবং খেলার দল হলো প্রাথমিক গোষ্ঠীর উদাহরণ।
৩৮) প্রশ্ন: বেকারত্ব বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বেকারত্ব” শব্দটি এসেছে ইংরেজি “unemployment” শব্দটি থেকে। যখন একজন মানুষ তার পেশা হিসেবে কাজ খুঁজে পায় না, তখন যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে বেকারত্ব বলা হয়। সহজভাবে বলতে গেলে, শ্রমবাজারে কাজের সুযোগের তুলনায় শ্রমের যোগান বেশি হলে সেই অবস্থাকে বেকারত্ব বলে।
৩৯) প্রশ্ন: দারিদ্র্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: দারিদ্র্য বলতে বোঝায়, যখন একজন ব্যক্তি তার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর মতো পর্যাপ্ত সম্পদ বা আয়ের অভাব বোধ করেন। দারিদ্র্য শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, এর সাথে সামাজিক ও রাজনৈতিক উপাদানও থাকতে পারে। সমাজতত্ত্ববিদ গোডার্ডের মতে, দারিদ্র্য এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব এবং তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হন তার অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে।
৪০) প্রশ্ন: শিক্ষার দুটি সামাজিক প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করো?
উত্তর: শিক্ষার দুটি সামাজিক প্রতিষ্ঠান হলো— পরিবার, বিদ্যালয় এবং রাষ্ট্র।
৪১) প্রশ্ন: সামাজিকীকরণ বলতে কী বোঝানো হয়?
উত্তর: সামাজিকীকরণ একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন সক্রিয় ও সম্পূর্ণ সদস্য হিসেবে বিকশিত হয়। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, “সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে সামাজিক প্রাণীতে পরিণত হয়।” এটি একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া।
৪২) প্রশ্ন: সামাজিক পরিবর্তন বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: সামাজিক পরিবর্তন হলো সামাজিক প্রথা, রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তন ঘটে, তা। এটি সমাজের কাঠামোগত বা কার্যগত রূপে হতে পারে। অর্থাৎ, সামাজিক কাঠামোর এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হলে তাকে সামাজিক পরিবর্তন বলা হয়।
৪৩) প্রশ্ন: সামাজিক সচলতা কী?
উত্তর: সামাজিক সচলতা হল কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একটি সামাজিক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তর। এই পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা, ভূমিকা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ, সামাজিক সচলতা হলো একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একটি সামাজিক মর্যাদা থেকে অন্য মর্যাদায় উন্নীত হওয়া।
৪৪) প্রশ্ন: সামাজিক স্তরবিন্যাস কী?
উত্তর: সামাজিক স্তরবিন্যাস একটি ব্যবস্থা, যেখানে অর্থ, সম্পদ, শিক্ষা, বংশ, বয়স, পেশা, লিঙ্গ, এবং ক্ষমতার মতো বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে সমাজের সদস্যদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়। যদিও মানবতাবাদী দর্শন বলে যে জন্মসূত্রে সবাই সমান, বাস্তবতা হলো, ইতিহাসের দিকে নজর দিলে এমন কোনো সমাজ খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মানুষের মধ্যে পার্থক্য নেই। সামাজিক স্তরবিন্যাস একটি সর্বজনীন বিষয়; সকল যুগে, সব সমাজেই এটি বিদ্যমান।
৪৫) প্রশ্ন: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞানের দুটি মূল বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন ?
উত্তর: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞানের দুটি বৈশিষ্ট্য হল:
১) সামাজিক উন্নয়ন: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞানের একটি প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের উন্নয়ন এবং অগ্রগতিকে সমর্থন করা।
২) প্রয়োগমূলক দৃষ্টিভঙ্গি: এটি সমাজবিজ্ঞানের একটি প্রয়োগমূলক দৃষ্টিভঙ্গি, যা সমাজের সমস্যা সমাধানে সরাসরি ব্যবহৃত হয়।
২০২০ সালের প্রশ্ন উত্তর
(Sociological Education)
১)প্রশ্ন: সংস্কৃতি কী?
উত্তর: সংস্কৃতি হলো একটি জটিল গঠনের সমষ্টি, যা অন্তর্ভুক্ত করে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচরণ এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের অর্জিত সব ধরনের দক্ষতা বা অভ্যাস।
2) প্রশ্ন: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান কী?
উত্তর: শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান হল একটি পদ্ধতি, যেখানে সমাজের প্রতিটি ব্যক্তি পারস্পরিক বোঝাপড়ার মাধ্যমে তাদের জ্ঞান ও বোধের বিকাশ ঘটায়। সমাজ এবং ব্যক্তির এই পারস্পরিক বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একটি নির্দিষ্ট বিষয়সূচি ও বিষয়জ্ঞান প্রতিষ্ঠিত হয়, যা শিক্ষাশ্রয়ী সমাজবিজ্ঞান নামে পরিচিত।
৩) প্রশ্ন: বেকারত্ব বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: বেকারত্ব” শব্দটি এসেছে ইংরেজি “unemployment” শব্দটি থেকে। যখন একজন মানুষ তার পেশা হিসেবে কাজ খুঁজে পায় না, তখন যে অবস্থার সৃষ্টি হয় তাকে বেকারত্ব বলা হয়। সহজভাবে বলতে গেলে, শ্রমবাজারে কাজের সুযোগের তুলনায় শ্রমের যোগান বেশি হলে সেই অবস্থাকে বেকারত্ব বলে।
৪) প্রশ্ন: দারিদ্র্য বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: দারিদ্র্য বলতে বোঝায়, যখন একজন ব্যক্তি তার বেঁচে থাকার জন্য প্রয়োজনীয় মৌলিক চাহিদাগুলো মেটানোর মতো পর্যাপ্ত সম্পদ বা আয়ের অভাব বোধ করেন। দারিদ্র্য শুধুমাত্র অর্থনৈতিক নয়, এর সাথে সামাজিক ও রাজনৈতিক উপাদানও থাকতে পারে। সমাজতত্ত্ববিদ গোডার্ডের মতে, দারিদ্র্য এমন একটি অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি তার নিজস্ব এবং তার উপর নির্ভরশীল ব্যক্তিদের ন্যূনতম প্রয়োজনীয়তাগুলো পূরণ করতে ব্যর্থ হন তার অর্থনৈতিক অবস্থার কারণে।
****5) প্রশ্ন: গোষ্ঠী কাকে বলে?
উত্তর : গোষ্ঠী বলতে আমরা বুঝি পারস্পরিক নির্দিষ্ট সামাজিক সম্পর্কে সম্পর্কযুক্ত ব্যক্তির সমষ্টিকে। এখানে গোষ্ঠী হল ব্যক্তিবর্গের পারস্পরিক সন্বন্ধ। সামাজিক গোষ্ঠী হল পরস্পরের সঙ্গে ক্রিয়া – প্রতিক্রিয়াশীল ও একটি স্বীকৃত সংগঠন সম্বলিত মনুষ্য সমষ্টি।
৬) প্রশ্ন: প্রাথমিক গোষ্ঠীর দুটি উদাহরণ উল্লেখ করো?
উত্তর: পরিবার এবং খেলার দল হলো প্রাথমিক গোষ্ঠীর উদাহরণ।
৭) প্রশ্ন: সাংস্কৃতিক বিলম্বন বা ব্যবধান কি?
উত্তর: যখন বস্তুগত সংস্কৃতি দ্রুত পরিবর্তন হয়, কিন্তু জৈব সংস্কৃতি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়, তখন এই দুইয়ের মধ্যে যে ব্যবধান সৃষ্টি হয়, সেটিকে সাংস্কৃতিক বিলম্বন বা সাংস্কৃতিক ব্যবধান বলা হয়।
৮) প্রশ্ন: সামাজিকীকরণ কী ?
উত্তর: সামাজিকীকরণ একটি প্রক্রিয়া, যার মাধ্যমে মানব শিশু সমাজের একজন সক্রিয় ও সম্পূর্ণ সদস্য হিসেবে বিকশিত হয়। সমাজবিজ্ঞানী কিংসলে ডেভিসের মতে, “সামাজিকীকরণের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি সম্পূর্ণরূপে সামাজিক প্রাণীতে পরিণত হয়।” এটি একটি জীবনব্যাপী এবং বহুমাত্রিক প্রক্রিয়া।
****৯)প্রশ্ন: শিক্ষার দুটি প্রত্যক্ষ সংস্থার নাম লেখ ?
উত্তর: শিক্ষার দুটি প্রত্যক্ষ সংস্থার নাম হল পরিবার এবং বিদ্যালয়, পাশাপাশি রাষ্ট্রও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১০) প্রশ্ন: সামাজিক স্তরবিন্যাস কী?
উত্তর: সামাজিক স্তরবিন্যাস একটি ব্যবস্থা, যেখানে অর্থ, সম্পদ, শিক্ষা, বংশ, বয়স, পেশা, লিঙ্গ, এবং ক্ষমতার মতো বিভিন্ন মানদণ্ডের ভিত্তিতে সমাজের সদস্যদের বিভিন্ন স্তরে ভাগ করা হয়। যদিও মানবতাবাদী দর্শন বলে যে জন্মসূত্রে সবাই সমান, বাস্তবতা হলো, ইতিহাসের দিকে নজর দিলে এমন কোনো সমাজ খুঁজে পাওয়া যাবে না যেখানে মানুষের মধ্যে পার্থক্য নেই। সামাজিক স্তরবিন্যাস একটি সর্বজনীন বিষয়; সকল যুগে, সব সমাজেই এটি বিদ্যমান।
১১) প্রশ্ন: সামাজিক সচলতা কী?
উত্তর: সামাজিক সচলতা হল কোনো ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একটি সামাজিক স্তর থেকে অন্য স্তরে স্থানান্তর। এই পরিবর্তনের ফলে ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা, ভূমিকা এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন ঘটে। অর্থাৎ, সামাজিক সচলতা হলো একজন ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর একটি সামাজিক মর্যাদা থেকে অন্য মর্যাদায় উন্নীত হওয়া।
১২) প্রশ্ন: সামাজিক পরিবর্তন কাকে বলে?
উত্তর: সামাজিক পরিবর্তন হলো সামাজিক প্রথা, রীতিনীতি, মূল্যবোধ ও সংস্কৃতিতে যে পরিবর্তন ঘটে, তা। এটি সমাজের কাঠামোগত বা কার্যগত রূপে হতে পারে। অর্থাৎ, সামাজিক কাঠামোর এক রূপ থেকে অন্য রূপে রূপান্তরিত হলে তাকে সামাজিক পরিবর্তন বলা হয়।
১৩) প্রশ্ন: যেকোনো দুটি সামাজিক পরিবর্তনের বাধার নাম লেখ?
উত্তর: সামাজিক পরিবর্তনের দুটি সমস্যা বা বাধা হলো:
ক) রক্ষণশীল মনোভাব: পুরোনো প্রথাকে ধরে রাখার মানসিকতা সামাজিক সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে বড় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। এই রক্ষণশীল মনোভাবকে কাটিয়ে উঠতে সমাজকে অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগের মাধ্যমে এগিয়ে যেতে হয়।
খ) অজ্ঞতা: আমাদের ভারতবর্ষের অনেক মানুষ এখনো নিরক্ষর। নিরক্ষরতার অভিশাপে তাদের জীবন অজ্ঞতার অন্ধকারে ডুবে থাকে। ফলে সমাজের বিভিন্ন সমস্যাদি দূর করে, সঠিক মূল্যবোধের জাগরণ ঘটিয়ে সামাজিক পরিবর্তন আনা খুবই কষ্টকর ও সময়সাপেক্ষ হয়ে পড়ে।
১৪) প্রশ্ন প্রাথমিক ও গৌণ গোষ্ঠীর একটি করে উদাহরণ দাও ?
উত্তর: প্রাথমিক গোষ্ঠীর উদাহরণ হতে পারে পরিবার বা খেলার দল। গৌণ বা মাধ্যমিক গোষ্ঠীর উদাহরণ হিসেবে উল্লেখ করা যেতে পারে রাজনৈতিক দল বা রাষ্ট্র।
Historical Education
Important প্রশ্ন -উত্তর
১) প্রশ্ন: স্কুল গুচ্ছ বা স্কুল জোট বা বিদ্যালয় গুচ্ছের উদ্দেশ্য কী?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের সুপারিশে বিদ্যালয় গুচ্ছের কথা উল্লেখ করা হয়। এতে বলা হয় যে, তিন অথবা চারটি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয় এবং দশ থেকে কুড়িটি নিম্ন প্রাথমিক বিদ্যালয়কে একত্রিত করে বিদ্যালয় গুচ্ছ গঠন করা হবে। এর প্রধান উদ্দেশ্য ছিল বিদ্যালয়গুলির মধ্যে সহযোগিতার মনোভাব গড়ে তোলা।
২)প্রশ্ন: কোঠারি কমিশনের দুটি উদ্দেশ্য লিখুন?
উত্তর: 1. কমিশন নারী শিক্ষার উন্নয়নের কৌশল এবং লক্ষ্য নির্ধারণে পরামর্শ দিয়েছে।
2. মাধ্যমিক পর্যায়ে মেয়েদের শিক্ষার প্রসার: মেয়েদের শিক্ষাকে ত্বরান্বিত করতে আলাদা স্কুল প্রতিষ্ঠা, হোস্টেল সুবিধা, বৃত্তি এবং বৃত্তিমূলক কোর্সের মতো সুযোগ-সুবিধা প্রদানের ওপর গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে।
৩) প্রশ্ন: কোঠারি কমিশনের মূল দুটি সুপারিশ লেখ ?
উত্তর: কোঠারি কমিশনের প্রধান সুপারিশগুলির মধ্যে রয়েছে:
ক) শিক্ষার সর্বজনীনীকরণ: কোঠারি কমিশন ১৪ বছর পর্যন্ত সকল শিশুকে বিনামূল্যে এবং বাধ্যতামূলক শিক্ষা প্রদানের উপর জোর দিয়েছে।
খ) সমান শিক্ষা সুযোগ: কমিশন একটি সাধারণ স্কুল ব্যবস্থার প্রস্তাব করেছে, যা সামাজিক বা অর্থনৈতিক পটভূমি নির্বিশেষে সকল শিশুকে সমান সুযোগ প্রদান করে শিক্ষার বৈষম্য দূর করবে।
গ) পাঠ্যক্রম সংস্কার: কমিশন একটি নমনীয় এবং সমন্বিত পাঠ্যক্রমের আহ্বান জানিয়েছে যা শিক্ষার্থীদের সামগ্রিক বিকাশকে উন্নীত করবে এবং তাদের প্রাসঙ্গিক দক্ষতা ও জ্ঞান প্রদান করবে।
৪) প্রশ্ন : কোঠারি কমিশনের ব্যর্থতার দুটি কারণ লিখুন ?
উত্তর: ক) বিদ্যালয়ের প্রধানদের অবস্থান নিয়ে কমিশন অস্পষ্টতা রেখেছে, যা শিক্ষার পরিচালনায় সমস্যার সৃষ্টি করেছে। খ) কমিশন সংস্কৃত ভাষাকে আরবি ভাষার সমতুল্য করে দেখার মাধ্যমে ভুল করেছে, যা অনেকের কাছে সমালোচনার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। গ) শিক্ষার মাধ্যম সম্পর্কিত কমিশনের মতামত শুধুমাত্র বিতর্কিতই ছিল না, তা বিভ্রান্তিকরও ছিল।
প্রশ্ন: মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন কবে, কার সভাপতিত্বে কি নামে গঠন করা হয়?
অথবা
মুদালিয়ার কমিশন কবে কার সভাপতিত্বে গঠিত হয়?
উত্তর: স্বাধীন ভারতের মাধ্যমিক শিক্ষার পুনর্গঠনের জন্য কেন্দ্রীয় শিক্ষা উপদেষ্টা পর্ষদ (CABE) একটি সর্বভারতীয় কমিশন গঠনের প্রস্তাব দেয়। সেই প্রস্তাবের ভিত্তিতে, মাদ্রাজ বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডক্টর লক্ষণ স্বামী মুদালিয়রের সভাপতিত্বে ১৯৫২ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর মাধ্যমিক শিক্ষা কমিশন (The Secondary Education Commission 1952-53) গঠন করা হয়।
৬) প্রশ্ন: জাতীয় শিক্ষানীতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ কর্মসূচি উল্লেখ কর?
উত্তর: জাতীয় শিক্ষানীতির একটি অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ দিক হল শিক্ষা ব্যবস্থা। কোনও দেশের শিক্ষা ব্যবস্থাকে সঠিকভাবে পরিচালিত করতে জাতীয় শিক্ষানীতির প্রয়োজনীয়তা অপরিহার্য। ১৯৮৬ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে দুটি উল্লেখযোগ্য কর্মসূচি হল- (১) অপারেশন ব্ল্যাকবোর্ড এবং (২) নবোদয় বিদ্যালয় গঠন।
৭) প্রশ্ন : জাতীয় শিক্ষানীতি (১৯৮৬)-তে গৃহীত নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচি গ্রহণের দুটি উদ্দেশ্য কী কী?
উত্তর:
ক) জাতীয় শিক্ষানীতিতে ১৯৮৬ সালে দেশের বিভিন্ন স্থানে আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয় বা নবোদয় বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করা হয়েছিল, যা মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান উন্নয়নের উদ্দেশ্যে।
খ) এই বিদ্যালয়ের লক্ষ্য ছিল মেধাবী ছাত্রদের উন্নত মানের মাধ্যমিক শিক্ষার সুযোগ করে দেওয়া, বিশেষত গ্রামের প্রতিভাবান শিক্ষার্থীদের জন্য। এছাড়াও, তপশিলি জাতি ও উপজাতিদের শিক্ষার্থীদের সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে একত্রে বেঁচে থাকার শিক্ষা দেওয়া।
৮) প্রশ্ন: নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন।
অথবা
জাতীয় শিক্ষানীতিতে গৃহীত নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচির দুটি বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করুন?
উত্তর:
ক) ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী: নবোদয় বিদ্যালয় কর্মসূচিতে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত শিক্ষাদান করা হবে।
খ) ভর্তির পরীক্ষা ব্যবস্থা: নবোদয় বিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য প্রবেশিকা পরীক্ষার ব্যবস্থা থাকবে। পরীক্ষার ফলাফলের ভিত্তিতে মেধাসম্পন্ন শিক্ষার্থীরা ভর্তির সুযোগ পাবে। এই পরীক্ষা প্রতি ব্লকে অনুষ্ঠিত হবে।
গ) আবাসিক ও অবৈতনিক: নবোদয় বিদ্যালয়গুলো হবে আবাসিক ও অবৈতনিক। শিক্ষার সমস্ত ব্যয়ভার সরকার বহন করবে। পোশাক ও খাবারের খরচও সরকার থেকে দেওয়া হবে।
৯) প্রশ্ন : ECCE বা প্রাথমিক শিশু যত্ন ও শিক্ষার গুরুত্ব ব্যাখ্যা করুন?
উত্তর:
গুরুত্ব:
ক) সামাজিক ও শিক্ষাগত ঐতিহ্য অনুযায়ী, ECCE জীবনের জন্য একটি বিস্তৃত প্রস্তুতি হিসেবে বিবেচিত হয়, যা শিশুদের তাদের বর্তমান বিকাশমূলক কাজ এবং আগ্রহগুলিতে সহায়তা করে।
খ) শিশুদের “এখানে এবং এখন” জন্য যত্ন নেওয়া তাদের ভবিষ্যতের শিক্ষাগত কর্মক্ষমতা সমর্থন করার মতোই গুরুত্বপূর্ণ।
১০) প্রশ্ন: সনদ আইনের দুটি গুরুত্ব বা সুপারিশ লেখো ?
উত্তর: ১৮১৩ খ্রিস্টাব্দের চার্টার অ্যাক্ট (সনদ আইন) ভারতের শিক্ষার ইতিহাসে একটি নতুন যুগের সূচনা করে। এর দুটি প্রধান গুরুত্ব হলো:
ক) শিক্ষা বিস্তারে মিশনারিদের পূর্ণ স্বাধীনতা: সনদ আইনের মাধ্যমে মিশনারিরা শিক্ষা বিস্তারের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা পান। এর ফলে শিক্ষায় ধর্মীয় বিষয়ের প্রাধান্য বৃদ্ধি পায়, এবং স্বাধীনভাবে বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা, পুস্তক প্রকাশ, নারী শিক্ষার প্রসার, ও অনাথ আশ্রম প্রতিষ্ঠার মত কাজ শুরু হয়।
খ) ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার উদ্যোগ: মিশনারিদের এই ধর্মনিরপেক্ষ শিক্ষার উদ্যোগকে বহু গুণীজন সমর্থন করেছিলেন, যা শিক্ষার প্রসার ও উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
১১) প্রশ্ন: 1813 সালের সনদ আইনের 43নং অনুচ্ছেদে কী উল্লেখ আছে?
উত্তর: সনদ আইনের 43 নং অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে: “সাহিত্য পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়ন এবং ভারতীয় শিক্ষিতদের মধ্যে প্রেরণা সঞ্চার, পাশাপাশি ব্রিটিশ অধিকৃত ভারতের অধিবাসীদের মধ্যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রচার ও উন্নয়নের জন্য রাজস্ব ভান্ডার থেকে বছরে কমপক্ষে এক লক্ষ টাকা ব্যয় করাই হবে সপরিষদ গভর্ণরজেনারেলের আইন সম্মত কাজ।
১2) প্রশ্ন:1813 সালের সনদ আইন কেন পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের পথকে সুগম করেছিল?
উত্তর: 1813 সালের সনদ আইনের 43নং ধারায় উল্লেখ করা হয়েছিল যে শিক্ষার জন্য অর্থ ব্যয় করা হবে, তবে সেই অর্থ প্রাচ্য বা পাশ্চাত্য শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হবে কিনা, তা স্পষ্ট করা হয়নি। এর ফলে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদীদের মধ্যে দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হয়। যদিও অর্থ ব্যয়ের নির্দিষ্ট দিক নির্দেশনা ছিল না, তবুও পাশ্চাত্যবাদীরা তর্ক ও যুক্তির মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসারের উপায় খুঁজে পেতে সক্ষম হন। তাই বলা যায়, 1813 সালের সনদ আইন পাশ্চাত্য শিক্ষা বিস্তারের পথকে অনেকখানি সুগম করেছিল।
১৩) প্রশ্ন: 1813 সালের সনদ আইনকে আধুনিক ভারতীয় শিক্ষার ভিত্তি প্রস্তর কেন বলা হয়?
উত্তর: 1813 সালের সনদ আইনকে আধুনিক ভারতীয় শিক্ষার ভিত্তি প্রস্তর বলা হয় কারণ এই আইনটির মাধ্যমে ইংরেজি ভাষা সরকারী স্বীকৃতি পায় এবং পাশ্চাত্য শিক্ষার প্রসার ঘটে। এছাড়াও, এই সনদে ধর্ম নিরপেক্ষ শিক্ষার ধারণা অন্তর্ভুক্ত ছিল, যা স্বাধীন ভারতীয় জাতীয়তার মূল লক্ষ্য হিসেবে গৃহীত হয়। শিক্ষায় মিশনারীদের ভূমিকা স্বীকৃতি পাওয়ার ফলে বেসরকারি উদ্যোগগুলোকেও উৎসাহিত করা হয়, যা আজও সরকারি ও বেসরকারি উদ্যোগের সমান্তরালে চলমান রয়েছে।
১৪) প্রশ্ন ১৮১৩ সালের সনদ আইনের ব্যাখ্যায় প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যবাদীদের বক্তব্য কী ছিল?
উত্তর: রক্ষণশীল প্রাচ্যবাদীরা মনে করতেন যে, সাহিত্যের পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়নের অর্থ হলো আরবী ও সংস্কৃত সাহিত্যের পুনরুজ্জীবন ও উন্নয়ন। তাদের মতে, দেশীয় পণ্ডিত বলতে আরবী বা সংস্কৃত ভাষায় শিক্ষিত ভারতীয়দের বোঝায়। অন্যদিকে, পাশ্চাত্যবাদীরা ইংরেজি সাহিত্যের উন্নয়ন এবং পাশ্চাত্য শিক্ষায় শিক্ষিত ভারতীয়দের গুরুত্বারোপ করতেন।
১৫) প্রশ্ন .মেকলে কে ছিলেন? তার অন্যতম কাজটি উল্লেখ কর ?
উত্তর: টমাস ব্যাবিটেন মেকলে ছিলেন বড়লাট বেন্টিঙ্কের আইন পরিষদের সদস্য। ১৮১৩ সালের সনদ আইনের পর, ভারতবর্ষের শিক্ষাক্ষেত্রে প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের মধ্যে দন্দ্ব চরমে ওঠে। তখন বেন্টিঙ্ক মেকলে-কে জিসি.পি.আই-এর সভাপতি নিযুক্ত করেন। ভারতে এসে তিনি প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের দ্বন্দ্বের অবসান ঘটান।
১৬) প্রশ্নঃ 1813 সালের সনদ আইনের 43 নম্বর ধারা প্রসঙ্গে মেকলে কী ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন?
অথবা
সনদ আইন প্রসঙ্গে মেকলের বক্তব্য বা সুপারিশ কী ছিল?
উত্তরঃ মেকলে ব্যাখ্যা দিয়েছিলেন যে সাহিত্যের উন্নয়ন বলতে শুধুমাত্র সংস্কৃত ও আরবি সাহিত্যকে বোঝায় না; ইংরেজি সাহিত্যকেও বোঝায়। শিক্ষিত ভারতীয় বলতে শুধু প্রাচ্য শিক্ষায় শিক্ষিতদের বোঝানো হয় না, বরং যারা লকের দর্শন, মিল্টনের কাজ, এবং নিউটনের পদার্থবিজ্ঞান প্রভৃতি বিষয়ে শিক্ষিত তাদেরকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এই টাকা শুধু প্রাচ্য সাহিত্যের পুনরুজ্জীবন ও ভারতীয় পণ্ডিতদের উৎসাহ বৃদ্ধির জন্যই নয়, বরং ব্রিটিশ প্রজাদের মধ্যে পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রসারণের জন্যও ব্যয় করা হবে।
১৭) প্রশ্নঃ মেকলের মিনিটের দুটি ক্রটি লেখো? অথবা ১৮১৩ সনদ আইনের দুটি ক্রটি লেখো?
উত্তর: মেকলের বিতর্কিত কার্যক্রমগুলি হল:
- ভারতবাসীদের প্রতি মেকলের দৃষ্টিভঙ্গী সহানুভূতিপূর্ণ ছিল না।
- তিনি গণশিক্ষার পরিবর্তে উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীকে শিক্ষাদানে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন।
- ভারতীয় ভাষাগুলির উন্নতি ও তাদের সম্ভাবনাকে তিনি বাধাগ্রস্ত করেছিলেন।
১৮) প্রশ্ন: মেকলে মিনিট-এর ভিত্তিতে লর্ড বেন্টিষ্ক শিক্ষানীতি প্রণয়নে (১৮১৩) কী কী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন?
উত্তর: লর্ড বেন্টিঙ্ক-এর সিদ্ধান্তগুলি ছিল নিম্নরূপ –
- ভারতীয়দের মধ্যে ইউরোপীয় সাহিত্য ও বিজ্ঞান চর্চার ব্যবস্থা করাই হবে সরকারী নীতির প্রধান উদ্দেশ্য।
- শিক্ষার জন্য নির্ধারিত অর্থ ইংরেজি শিক্ষার জন্য ব্যয় করা হবে।
- প্রাচ্যবিদ্যা প্রতিষ্ঠানগুলো বন্ধ করা হবে না, তবে নতুন কোন আর্থিক সহায়তাও প্রদান করা হবে না।
- প্রাচ্য ভাষায় বই ছাপানোর জন্য যে বিপুল ব্যয় করা হত, তা বন্ধ করা হবে।
- শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে ইংরেজি ভাষা ব্যবহৃত হবে।
১৯) প্রশ্ন: মেকলের ভূমিকা কোন কোন দৃষ্টিকোণ থেকে প্রশংসনীয়?
উত্তর : মেকলের প্রশংসনীয় দিকগুলি হল-
- মেকলের সিদ্ধান্ত দীর্ঘ দুই দশক ধরে চলে আসা প্রাচ্য-পাশ্চাত্য দ্বন্দ্বের অবসান ঘটায়।
- ইংরেজি শিক্ষা প্রসারের সাথে সাথে পাশ্চাত্য বিজ্ঞান চর্চা বৃদ্ধি পায়।
- ইংরেজি সাহিত্যের চর্চা পরোক্ষভাবে বিভিন্ন ভারতীয় ভাষার সাহিত্যের পুষ্টিতে উপাদান জোগায়।
20) প্রশ্ন: টুঁইয়ে পড়া নীতিটি ব্যাখ্যা করো ?
উত্তর : টমাস ব্যাবিংটন মেকলে যে শিক্ষানীতি প্রবর্তন করেছিলেন, সেটি ‘টুঁইয়ে পড়া নীতি’ নামে পরিচিত। মেকলের উদ্দেশ্য ছিল ভারতীয় উচ্চ ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর শিক্ষার্থীদের ইংরেজি শিক্ষায় শিক্ষিত করা। এর ফলে তারা রক্তের দিক থেকে ভারতীয় হলেও রুচি, ভাবধারা, এবং মতাদর্শে ইংরেজ হয়ে উঠবে। এই শিক্ষাধারা স্বাভাবিকভাবে নিম্নস্তরে প্রবাহিত হবে। তাই, সেই সময়ে সরকারের প্রধান দায়িত্ব ছিল সাধারণ মানুষের শিক্ষার বিস্তারের পরিবর্তে ক্রমনিন্মমুখী পরিযুত নীতি গ্রহণ করা।
২১) প্রশ্ন: “G.C.P.I” কেন গঠিত হয়?
উত্তর: 1813 সালের সনদ আইনের 43 নম্বর ধারায় শিক্ষাখাতে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। এই আইনের অধীনে, শিক্ষার নীতি নির্ধারণ এবং ভারতীয়দের মধ্যে উন্নত ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রবর্তনের মাধ্যমে নৈতিক গঠন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দশজন সদস্য বিশিষ্ট G.C.P.I গঠিত হয়।
উত্তর: 1813 সালের সনদ আইনের 43 নম্বর ধারায় শিক্ষাখাতে ব্যয় করার কথা বলা হয়েছে। এই আইনের অধীনে, শিক্ষার নীতি নির্ধারণ এবং ভারতীয়দের মধ্যে উন্নত ও প্রয়োজনীয় শিক্ষা প্রবর্তনের মাধ্যমে নৈতিক গঠন নিশ্চিত করার লক্ষ্যে দশজন সদস্য বিশিষ্ট G.C.P.I গঠিত হয়।
২২) প্রশ্ন: মেকলের মিনিট কোন সালে গৃহীত হয়েছিল? শিক্ষাক্ষেত্রে এর প্রতিক্রিয়া কী হয়েছিল?
উত্তর: ১৮৩৫ খ্রিস্টাব্দের ২ ফেব্রুয়ারি মেকলে তার বিখ্যাত শিক্ষা সম্পর্কিত মিনিট বড়লাটের কাছে পেশ করেন। ১৮৩৫ সালে সপরিষদ বড়লাট মেকলের প্রস্তাব সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করেন এবং এক ঘোষণায় জানানো হয় যে, এখন থেকে শুধুমাত্র ইংরেজি এবং পাশ্চাত্য জ্ঞান-বিজ্ঞান শিক্ষার জন্যই সরকারি বরাদ্দ অর্থ ব্যয় করা হবে। এর ফলে ইংরেজির মাধ্যমে পাশ্চাত্য শিক্ষার যুগ শুরু হয় এবং ভারতের বিভিন্ন স্থানে ইংরেজি বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হতে থাকে।
২৩ প্রশ্ন: মেকলে মিনিট কী?
উত্তর: বড় লাট লর্ড বেন্টিকের শাসনামলে (১৮২৮-৩৫ খ্রি) কমিটি অফ পাবলিক ইন্সট্রাকশনের সভাপতি এবং উগ্র পাশ্চাত্যবাদী থমাস ব্যাবিংটন মেকলে ভারতে পাশ্চাত্য শিক্ষা প্রবর্তনের জন্য ১৮৩৫ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বড় লাটের কাছে একটি প্রস্তাব পেশ করেন, যা ‘মেকলে মিনিট’ বা ‘মেকলের প্রস্তাব’ নামে পরিচিত।
২৪) প্রশ্ন: উডের ডেসপ্যাচ কী?
উত্তর: ১৮৫৪ সালে তৎকালীন গভর্নর জেনারেল লর্ড ডালহৌসির কাছে উড একটি প্রস্তাবনা পাঠান। এই প্রস্তাবনায় তিনি উল্লেখ করেন যে প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে স্থানীয় ভাষা ব্যবহার করা উচিত, উচ্চ বিদ্যালয়গুলোতে আ্যাংলো ভাষাতাত্ত্বিক ভাষা গ্রহণ করা উচিত এবং কলেজের স্তরে ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা উচিত। এই প্রস্তাবনাটি উডের শিক্ষা প্রস্তাব বা উডের ডেসপ্যাচ নামে পরিচিত।
২৫) প্রশ্ন: কে এবং কোন দলিলকে ‘ম্যাগনা কার্টা’ বলে অভিহিত করেছেন ?
উত্তর: ইতিহাসবিদ জেমস উডের ডেসপ্যাচকে “ম্যাগনা কার্টা” বলে অভিহিত করেছেন। কারণ, তিনি উল্লেখ করেছেন যে ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে যা কিছু ঘটেছিল, তার পূর্ণতা লাভ করেছে ১৮৫৪ খ্রিষ্টাব্দে উডের ডেসপ্যাচে। এরপর শিক্ষাক্ষেত্রে যা কিছু ঘটেছে, তার মূল ভিত্তি এই ডেসপ্যাচ। এজন্যই তিনি এই দলিলকে ‘ম্যাগনা কার্টা’ বলে আখ্যা দিয়েছেন।
২৬)প্রশ্ন: উডের ডেসপ্যাচে নারীশিক্ষা সম্পর্কে কি বলা হয়েছে ?
উত্তর: উডের ডেসপ্যাচে নারীশিক্ষার বিস্তারের জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এতে বলা হয়েছে যে আরও বেশি সংখ্যক বালিকা বিদ্যালয় স্থাপন করা উচিত। পাশাপাশি, বালিকা বিদ্যালয়গুলি যাতে সহজে সরকারি অনুদান পায় সেই বিষয়েও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।
২7) প্রশ্ন: ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশনের নাম কী? এটি কবে গঠিত হয়েছিল ?
উত্তর: ভারতের প্রথম শিক্ষা কমিশন ছিল ‘হান্টার কমিশন’। ১৮৮২ সালের ৩রা ফেব্রুয়ারী, উইলিয়ম হান্টারের নেতৃত্বে এই কমিশনটি গঠিত হয়।