crossorigin="anonymous">     crossorigin="anonymous"> "দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা" নবনীতা দেবসেন কবিতার বড় প্রশ্ন এবং উত্তর | W.B

“দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা” নবনীতা দেবসেন কবিতার বড় প্রশ্ন এবং উত্তর | W.B

CLASS-XII

SEMESTER-III

"দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা" নবনীতা দেবসেন কবিতার বড় প্রশ্ন এবং উত্তর | W.B

****1) প্রশ্ন. 'দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা' কবিতায় নারীর জয়লাভের প্রেরণা কীভাবে ব্যক্ত হয়েছে?

'দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা' কবিতায় নারীর জয়লাভের প্রেরণা:

এই কবিতায় নবনীতা দেবসেন নারীদের সাহস এবং আত্মবিশ্বাসের প্রতীক হিসেবে চিত্রিত করেছেন। কবিতার ভাষা এবং বক্তব্য নারীদের অনুপ্রাণিত করে, যাতে তারা তাদের নিজের শক্তি এবং যোগ্যতাকে বুঝতে পারে। কবি নারীদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন যে তারা যেন তাদের লক্ষ্যে স্থির থাকে এবং সকল প্রতিকূলতা কাটিয়ে ওঠে। তিনি নারীদের সাফল্যের পথে যে সামাজিক বাধাগুলি রয়েছে, সেগুলি অতিক্রম করার জন্য তাদের শক্তি এবং মনোবল জাগিয়ে তোলার কথা বলেছেন। কবিতার প্রতিটি স্তবকে নারীর প্রেরণা এবং জয়লাভের বার্তা স্পষ্ট।

নারীর আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রত্যয়:

কবিতায় নারীর জয়লাভের মূল প্রেরণা হলো তার আত্মবিশ্বাস ও আত্মপ্রত্যয়। কবি দেখিয়েছেন, নারী কখনোই নিজের শক্তি ও সামর্থ্যকে অবহেলা করেনি। সমাজে নারীকে অনেক সময় অবদমিত রাখা হয়, তবে এই অবদমনই নারীর ভেতর থেকে এক অদম্য শক্তির সঞ্চার ঘটায়। কবিতার নারী চরিত্রটি এই আত্মবিশ্বাসের প্রতীক। তার অন্তরের ইচ্ছাশক্তি ও চেতনা তাকে এগিয়ে নিয়ে যায়।

সমাজের প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করার চিত্র:

‘দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা’ কবিতায় সমাজের বিভিন্ন প্রতিকূলতাকে চিত্রায়িত করা হয়েছে। নারীর সামনে যেসব বাধা তৈরি হয়—লিঙ্গবৈষম্য, সামাজিক অনাচার, কুসংস্কার—সবকিছুই তার চলার পথে প্রতিবন্ধক। তবে কবি এখানে নারীর প্রতিকূলতাকে অতিক্রম করার দৃঢ়তা ও সাহসিকতাকে তুলে ধরেছেন। নারী এই বাধাকে একে একে অতিক্রম করে নিজের অবস্থান নিশ্চিত করে। তার সংগ্রামের এই অগ্রগতি আসলে পুরো মানবসমাজের জয়।

নারীর চেতনা ও মুক্তির আকাঙ্ক্ষা:

নারীর জয়লাভের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রেরণা হলো তার মুক্তির আকাঙ্ক্ষা। কবিতায় নারীকে যে কেবল একজন ব্যক্তি হিসেবে উপস্থাপন করা হয়েছে তা নয়; তাকে এক সংগ্রামী ও আত্মমুক্তির প্রতীক হিসেবেও দেখানো হয়েছে। নারীর মুক্তি কেবল ব্যক্তিগত নয়, এটি সমগ্র সমাজ ও মানবতার মুক্তির প্রতীক। কবি এই মুক্তির আকাঙ্ক্ষাকে অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে উপস্থাপন করেছেন।

নারীর জয়লাভে সাহিত্যের ভূমিকা:

কবিতাটি শুধুমাত্র নারীর জয়লাভের একটি গল্প নয়; এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বার্তা বহন করে। কবি নারীর জয়লাভের মাধ্যমে যে প্রেরণা সৃষ্টি করেছেন, তা সাহিত্যের একটি অমূল্য দিক। নারীর জয়লাভ সাহিত্যের মাধ্যমে সমাজে আলোড়ন তোলে, যা অন্য নারীদেরও অনুপ্রাণিত করে।

নারীশক্তির উদযাপন:

কবিতার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো নারীশক্তির উদযাপন। কবি নারীর শক্তি, মনোবল ও চেতনার এমন একটি রূপ চিত্রিত করেছেন, যা প্রতিটি নারীকে নতুনভাবে অনুপ্রাণিত করে। নারী তার সমস্ত বাধা পেরিয়ে বিজয়ী হয়। এই বিজয়ের গল্প কেবল তার একার নয়, এটি সমাজের সমস্ত নারীর জন্য একটি উদাহরণ হয়ে ওঠে।

কবিতার প্রতীকধর্মিতা:

‘দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা’ কবিতায় প্রতীকধর্মিতা অত্যন্ত গুরুত্ব বহন করে। কবিতায় নারীর জয়লাভ কেবল ব্যক্তিগত বা সামাজিক স্তরে সীমাবদ্ধ নয়; এটি একটি বৃহৎ আদর্শের প্রতীক। এই আদর্শ হলো নারী ও পুরুষের সমানাধিকার, নারীর মর্যাদা ও স্বাধীনতার প্রতি শ্রদ্ধা। কবি নারীর সংগ্রাম ও জয়ের মাধ্যমে সমাজের সামগ্রিক উন্নতির পথ নির্দেশ করেছেন।

নারীর জয়লাভের শিক্ষা:

এই কবিতা থেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হলো—প্রত্যেক নারীর ভেতরে রয়েছে এক অপার শক্তি, যা তাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে। নারীর এই শক্তি কেবল তার নিজস্ব নয়, এটি সমগ্র সমাজের উন্নতি ও অগ্রগতির জন্য অপরিহার্য। কবি নারীর জয়লাভের মাধ্যমে এই গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দিতে চেয়েছেন যে, নারীর ক্ষমতায়ন সমাজের প্রতিটি স্তরে প্রভাব ফেলে।

উপসংহার:

‘দ্বিগ্বিজয়ের রূপকথা’ কবিতায় নারীর জয়লাভের প্রেরণা অত্যন্ত সুশৃঙ্খল ও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। কবি সুভাষ মুখোপাধ্যায় নারীর জয়গাঁথাকে সাহিত্যের এক অনন্যসাধারণ উচ্চতায় নিয়ে গেছেন। নারীর আত্মবিশ্বাস, সংগ্রামী চেতনা ও শক্তির উদাহরণ সমাজকে নতুনভাবে ভাবতে বাধ্য করে। এই কবিতা নারীর স্বাধীনতা ও মর্যাদার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে একটি চিরন্তন বার্তা দিয়ে যায়, যা প্রতিটি পাঠককে অনুপ্রাণিত করে।

Leave a Comment