crossorigin="anonymous">     crossorigin="anonymous"> B.A 1st Semester Political Science Minor Long Question Answer Suggestion | Kalyani University 2025

B.A 1st Semester Political Science Minor Long Question Answer Suggestion | Kalyani University 2025

University of Kalyani Suggestion

(Indian Constitution) (ভারতীয়সংবিধান)

Kalyani University B.A 1st Semester Political Science Minor Long Question Answers Suggestion 2025

• সাজেশন পিডিএফ পেজের পেজ সংখ্যা 45 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনের বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.

এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।

এখানে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী সাজানো আছে

গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন ও উত্তর:

---গণপরিষদ ও প্রস্তাবনা---

****1) প্রশ্ন. ভারতীয় সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি আলোচনা করো। ৫/১০

ভূমিকা: ভারতীয় সংবিধান বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম ও বিস্তৃত সংবিধান। এটি ২৬শে নভেম্বর ১৯৪৯ সালে গৃহীত হয় এবং ২৬শে জানুয়ারি ১৯৫০ সালে কার্যকর হয়। সংবিধান রচনার মূল উদ্দেশ্য ছিল একটি সার্বভৌম, সমাজতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র গঠন করা। এটি ভারতীয় জনগণের মৌলিক অধিকার, কর্তব্য এবং সরকারের কাঠামো নির্ধারণ করেছে। ভারতের সংবিধানের প্রধান বৈশিষ্ট্যগুলি নিম্নরূপ:

১. লিখিত ও সর্ববৃহৎ সংবিধান: ভারতীয় সংবিধান বিশ্বের সবচেয়ে দীর্ঘতম ও বিস্তারিত লিখিত সংবিধান। এটি মোট ২২টি অংশ, ৩৯৫টি অনুচ্ছেদ ও ১২টি তফসিলে বিভক্ত। সংবিধানটি রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থা ও নাগরিকদের অধিকার ও দায়িত্ব সংক্রান্ত বিস্তারিত নির্দেশনা প্রদান করে।

২. গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা: ভারতীয় সংবিধানে জনগণের শাসনের ভিত্তিতে একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রব্যবস্থা গঠন করা হয়েছে। জনগণ তাদের প্রতিনিধিদের সরাসরি নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত করে এবং সরকার জনগণের প্রতি দায়বদ্ধ।

৩. সার্বভৌমত্ব: ভারত একটি সার্বভৌম রাষ্ট্র, অর্থাৎ এটি অন্য কোনো রাষ্ট্রের অধীন নয়। সরকার স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে এবং দেশের অভ্যন্তরীণ ও বৈদেশিক নীতিগুলি সংবিধানের ভিত্তিতে পরিচালিত হয়।

৪. ধর্মনিরপেক্ষতা: ভারতীয় সংবিধানের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো ধর্মনিরপেক্ষতা। এটি নিশ্চিত করে যে রাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট ধর্মকে সমর্থন করবে না এবং সকল ধর্মের প্রতি সমান আচরণ করবে। নাগরিকদের ধর্ম পালনের স্বাধীনতা সংবিধানে নিশ্চিত করা হয়েছে।

৫. সামাজিক ন্যায়বিচার ও সাম্য: ভারতীয় সংবিধান সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কিছু মৌলিক নীতির ভিত্তি স্থাপন করেছে। এটি জাতি, ধর্ম, লিঙ্গ, জন্মস্থান বা বর্ণ নির্বিশেষে সকল নাগরিককে সমান অধিকার প্রদান করে। অনগ্রসর শ্রেণির উন্নতির জন্য সংরক্ষণ নীতি ও বিভিন্ন কল্যাণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে।

৬. মৌলিক অধিকার: সংবিধানের তৃতীয় ভাগে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ মৌলিক অধিকারগুলি হলো:
• সমতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ১৪-১৮)
• স্বাধীনতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ১৯-২২)
• শোষণ থেকে মুক্তির অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৩-২৪)
• ধর্মীয় স্বাধীনতার অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৫-২৮)
• সংস্কৃতি ও শিক্ষার অধিকার (অনুচ্ছেদ ২৯-৩০)
• সাংবিধানিক প্রতিকার লাভের অধিকার (অনুচ্ছেদ ৩২)

৭. মৌলিক কর্তব্য: ১৯৭৬ সালের ৪২তম সংবিধান সংশোধনী দ্বারা সংবিধানের ৫১-ক অনুচ্ছেদে নাগরিকদের জন্য ১১টি মৌলিক কর্তব্য সংযোজন করা হয়। এর মধ্যে জাতীয় ঐক্য রক্ষা, সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা, পরিবেশ সংরক্ষণ ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত।

৮. একক নাগরিকত্ব: ভারতীয় সংবিধানে একক নাগরিকত্বের ব্যবস্থা রয়েছে। অর্থাৎ, ভারতের যে কোনো নাগরিককে শুধুমাত্র ভারতীয় নাগরিক হিসেবে গণ্য করা হয়, পৃথক কোনো রাজ্যের নাগরিকত্বের ধারণা নেই।

৯. যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো: ভারতীয় সংবিধান একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো প্রদান করেছে, যেখানে কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকার পৃথকভাবে তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে। তবে সংবিধানে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বেশি, যা এটিকে একটি ‘সশক্ত যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা’ বলে পরিচিত করেছে।

১০. বিচার বিভাগের স্বাধীনতা: সংবিধান বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, যা গণতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। সুপ্রিম কোর্ট ও উচ্চ আদালতগুলি সংবিধান ও আইন অনুযায়ী তাদের ক্ষমতা প্রয়োগ করে এবং নির্বাহী বিভাগের ওপর নিরপেক্ষভাবে নজরদারি রাখে।

১১. পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থা: ভারতীয় সংবিধানে স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের জন্য পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার উল্লেখ রয়েছে। ১৯৯২ সালের ৭৩তম ও ৭৪তম সংশোধনীর মাধ্যমে গ্রাম ও শহর পর্যায়ে স্থানীয় সরকার ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করা হয়েছে।

১২. পরিবর্তনশীল সংবিধান: ভারতীয় সংবিধান একটি গতিশীল সংবিধান, যা প্রয়োজন অনুযায়ী সংশোধন করা যায়। সংসদের মাধ্যমে এটি সংশোধন করা সম্ভব, যা সময়ের সাথে পরিবর্তিত প্রয়োজন মেটাতে সাহায্য করে।

উপসংহার: ভারতীয় সংবিধান একাধারে স্থিতিশীল ও পরিবর্তনশীল। এটি গণতন্ত্র, সাম্য, ধর্মনিরপেক্ষতা, মৌলিক অধিকার ও ন্যায়বিচারের উপর ভিত্তি করে গঠিত। সংবিধানের বিশেষত্বই ভারতের গণতান্ত্রিক কাঠামোকে শক্তিশালী করে তুলেছে এবং এটি বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধান হিসেবে পরিচিত।

---মৌলিক অধিকার ও কর্তব্য---

****2) প্রশ্ন. ভারতের সংবিধানের সংরক্ষিত 'সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার'-টি ব্যাখ্যা কর। (১০)

দলিল, যা ভারতের শাসনতন্ত্র এবং রাজনীতির কাঠামো স্থাপন করেছে। এটি মানুষের মৌলিক অধিকারের সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। এর মধ্যে একটি বিশেষ অধিকার হলো ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার’, যা ভারতীয় নাগরিকদের প্রতি রাষ্ট্রের দায়িত্ববোধের নিদর্শন হিসেবে কাজ করে।

১. সাংবিধানিক প্রতিবিধান: অর্থ ও প্রেক্ষাপট:

‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান’ বলতে বোঝানো হয়, এমন একটি অধিকার বা সুবিধা যা সরাসরি সংবিধানে প্রতিষ্ঠিত এবং রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয়। এর মাধ্যমে নাগরিকদের কিছু মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত থাকে, এবং রাষ্ট্র যদি সেই অধিকার লঙ্ঘন করে, তাহলে নাগরিকরা আদালতে যেতে পারেন।

২. সংবিধানে সাংবিধানিক প্রতিবিধান সংক্রান্ত বিধান:

ভারতের সংবিধানের 32 নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, 'মৌলিক অধিকার'-এর সুরক্ষা দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের আইনগত ব্যবস্থা নেওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে। এটি ‘প্রতিবিধান অধিকার’ নামে পরিচিত। ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে যে, যদি কেউ নিজের মৌলিক অধিকার ভঙ্গ হওয়া অনুভব করেন, তবে তিনি সরাসরি সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারেন এবং আদালত তার অধিকার সুরক্ষায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

৩. ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে দেওয়া অধিকার:

ভারতের সংবিধান ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদে নাগরিকদের ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ সুরক্ষিত রাখে। এই অধিকার নাগরিকদের একটি মৌলিক সুরক্ষা প্রস্তাব করে, যেখানে তারা নিজের অধিকার হরণ হওয়ার পর আইনি প্রতিকার প্রাপ্তির অধিকারী হন। সুপ্রিম কোর্ট বা উচ্চ আদালতগুলো নাগরিকদের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘন হলে তাদের পক্ষ থেকে মামলা গ্রহণ করতে বাধ্য থাকে।

এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ বিধান, কারণ নাগরিকদের অধিকার সম্পর্কে যদি কোনও প্রশ্ন উঠতে থাকে, তখন তারা সরাসরি আদালতে গিয়ে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠিত করতে পারেন।

৪. সাংবিধানিক প্রতিবিধানের অধিকার এবং তার বাস্তবতা:

ভারতের সংবিধানে মূলত পাঁচটি মৌলিক অধিকার রয়েছে, যেগুলো হলো— অধিকার অনুযায়ী জীবন ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা, সমানতার অধিকার, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকারের অধিকার এবং সংবিধান দ্বারা নিশ্চিত করা অন্যান্য অধিকার। যখন রাষ্ট্র এসব অধিকার লঙ্ঘন করে, তখন ওই নাগরিক সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করতে পারেন।

এর মাধ্যমে একটি পরিষ্কার ব্যবস্থা তৈরি হয়েছে, যেখানে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার নিরাপদ থাকে, এবং তারা তা লঙ্ঘিত হলে অবিলম্বে আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করতে পারেন। ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ একটি কার্যকর মাধ্যম হিসেবে কাজ করে, যাতে নাগরিকদের রক্ষায় আদালত অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করতে পারে।

৫. সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকা:

ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ এর অন্যতম প্রধান রক্ষক। সংবিধানের ৩২ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুসারে, যদি কোনও নাগরিক মনে করেন যে তার মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়েছে, তিনি সুপ্রিম কোর্টে রিট পিটিশন দায়ের করতে পারেন। সুপ্রিম কোর্ট এই রিট পিটিশনের ভিত্তিতে নাগরিকের অধিকার পুনরুদ্ধারে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে।

এখানে সুপ্রিম কোর্টের উদাহরণ হিসেবে ‘ম্যানেকশ’ মামলা (Maneka Gandhi v. Union of India, 1978) উল্লেখ করা যেতে পারে, যেখানে সুপ্রিম কোর্ট ঘোষণা করেছে যে, মৌলিক অধিকার কেবল আদালতের মাধ্যমে একমাত্র সুরক্ষিত হতে পারে, এবং এই অধিকার লঙ্ঘন হলে জনগণকে সংশ্লিষ্ট আদালতে যাওয়ার অধিকার রয়েছে।

৬. সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার এবং তার সীমাবদ্ধতা:

যদিও ‘সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার’ নাগরিকদের মৌলিক অধিকার রক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, তবে এই অধিকার কিছু নির্দিষ্ট সীমাবদ্ধতার মধ্যে থাকে। ৪৪তম সংবিধান সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রকে নাগরিকদের মৌলিক অধিকার কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে সীমিত করার অধিকার দেওয়া হয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, রাষ্ট্র নিরাপত্তার স্বার্থে কিছু অধিকার সীমিত করতে পারে। তবে, এই বিধান শুধুমাত্র সেই অবস্থায় প্রযোজ্য হবে যেখানে রাষ্ট্রের প্রয়োজনীয়তা এবং জনস্বার্থের সঙ্গে এটি সঙ্গতিপূর্ণ থাকে।

৭. সাম্প্রতিক পরিস্থিতি:

ভারতের সংবিধান এবং আদালতগুলো নাগরিকদের সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার সুরক্ষায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বিভিন্ন সময়ে, এমনকি সমাজের নানা স্তরের মধ্যে সামাজিক পরিবর্তনের জন্য আদালতের সিদ্ধান্তও সরকারের কাছে আদর্শ হয়ে ওঠে।

উপসংহার:

ভারতের সংবিধানের সংরক্ষিত 'সাংবিধানিক প্রতিবিধান অধিকার' একটি অত্যন্ত মৌলিক ধারণা যা নাগরিকদের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত রাখে। এটি নাগরিকদের সরকার বা অন্য কোনো শক্তিশালী প্রতিষ্ঠান দ্বারা লঙ্ঘিত হলে আদালতের মাধ্যমে বিচার পাওয়ার অধিকার দেয়। এই অধিকার রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে নাগরিকদের একমাত্র নিরাপত্তা প্রদান করে এবং নাগরিকদের মৌলিক অধিকারগুলি আইনগতভাবে রক্ষিত রাখে।

---ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি---

***3) প্রশ্ন. ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে বিতর্কটির সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা কর।(৫)

ভারতীয় রাজনীতিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ও গভীর বিতর্কের বিষয় হলো ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি। এই বিতর্কটি মূলত ভারতীয় সংবিধান ও তার কাঠামো সম্পর্কিত বিভিন্ন দৃষ্টিকোণ এবং মতামতের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতির বিতর্ক মূলত দুটি প্রধান ধারণার মধ্যে বিভক্ত: একটি হল 'সংবিধানিক কেন্দ্রীয়করণ' এবং অন্যটি হল 'রাজ্য কর্তৃত্ব'। এই দুটি ধারণা নিয়ে বহু বছর ধরে আলোচনার এবং বিতর্কের ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।

১. কেন্দ্রীয়করণেরপক্ষেযুক্তি: ভারতের সংবিধান মূলত একটি 'কেন্দ্রীভূত' সংবিধান হিসেবে তৈরি করা হয়েছিল। ভারতীয় রাজনীতি ও প্রশাসনের অন্যতম মূল দৃষ্টিভঙ্গি ছিল একটি শক্তিশালী কেন্দ্রীয় সরকার। এটি ছিল ভারতের পঞ্চবছর পরিকল্পনা এবং সামরিক বাহিনী পরিচালনা, জাতীয় নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক নীতি গ্রহণের জন্য একক কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার জন্য। কেন্দ্রীয় সরকারকে দেশের বৃহত্তর ঐক্য ও অখণ্ডতা রক্ষা করার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল।

একটি যুক্তি হলো, একক কেন্দ্রীয় শাসন ব্যবস্থা দেশের ভৌগোলিক ও সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে। ভারতের বিভিন্ন ভাষা, ধর্ম, জাতি, সংস্কৃতি এবং জাতিগত বৈচিত্র্যের মাঝে কেন্দ্রীয় সরকারের শক্তিশালী নিয়ন্ত্রণ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হয়। ভারতীয় ইউনিয়নের কেন্দ্রীয়করণের পক্ষে এ ধরনের ব্যাখ্যা দেওয়া হয়।

২. রাজ্যকর্তৃত্বেরপক্ষেযুক্তি: ভারতের একটি বৈশিষ্ট্যপূর্ণ দিক হল রাজ্য সরকারের উপর স্বাধীনতা বা স্বায়ত্তশাসনের অধিকার। অনেকেই বলেন, রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসন থাকা উচিত যাতে তারা নিজেদের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক স্বার্থে সিদ্ধান্ত নিতে পারে। ভারতীয় সংবিধানে রাজ্যগুলোর জন্য স্বাধীনতার কিছু রক্ষাকবচ রাখা হয়েছিল, বিশেষত তাদের আইন প্রণয়ন এবং প্রশাসনিক ক্ষমতা বাস্তবায়ন নিয়ে।

এছাড়া, ভারতে বিভিন্ন জাতিগত ও আঞ্চলিক বৈচিত্র্য থাকতে হওয়ায়, রাজ্যগুলোর মধ্যে সুনির্দিষ্ট শাসন ব্যবস্থা থাকা উচিত। এটি রাজ্যগুলোর ন্যায্যতা এবং সমান অধিকার নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। রাজ্য সরকারের প্রতিনিধিরা তাদের স্থানীয় জনগণের প্রকৃত চাহিদা এবং সমস্যা উপলব্ধি করতে পারবে এবং তারা সেই অনুযায়ী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে সক্ষম হবে।

৩. ১৯৫০-এরদশকেরবিতর্ক: ১৯৫০-এর দশকেই ভারতীয় রাজনীতির এই বিতর্কটি সবচেয়ে তীব্র হয়ে ওঠে। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরুর শাসনকালে, রাজ্যগুলোর ক্ষমতা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে অনেকটা সংঘর্ষ হয়েছিল। বিভিন্ন রাজ্য সরকার তাদের ক্ষমতা কেড়ে নেওয়ার অভিযোগ করেছিল। একদিকে, 'জাতীয় একতা'র পক্ষে থাকা কেন্দ্রীয় সরকার, অন্যদিকে, রাজ্য সরকারের স্বায়ত্তশাসন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিল।

এছাড়া, ভারতের সংবিধানে রাজ্যগুলির জন্য যে ক্ষমতাগুলি নির্ধারিত ছিল, তার কিছু অংশ কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক সংশোধন করা হয়েছিল। যেমন, ভারতের সংবিধানে 'সমষ্টিগত সুবিধা' (concurrent list) নামে একটি তালিকা ছিল, যেখানে কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের একসাথে আইন প্রণয়নের ক্ষমতা ছিল। এই তালিকা নিয়ে বিতর্ক চলতে থাকে, কারণ এতে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রাজ্য সরকারের ক্ষমতার ক্ষয় হয়েছিল।

৪. বর্তমানপরিস্থিতি: বর্তমানে, ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে বিতর্ক কিছুটা মৃদু হয়ে গেলেও, তা এখনও বিদ্যমান। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় সরকারের ক্ষমতা আরও বৃদ্ধি পেয়েছে, যা বিভিন্ন রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে সমালোচিত হচ্ছে। অনেক রাজ্য সরকার মনে করে যে, কেন্দ্রীয় সরকারের অধিক শক্তি তাদের নিজস্ব শাসন ব্যবস্থায় হস্তক্ষেপ করছে। অন্যদিকে, কেন্দ্রীয় সরকারও বলছে যে, তা দেশের উন্নয়ন ও একতাবদ্ধতা নিশ্চিত করার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

৫. উপসংহার: ভারতীয় যুক্তরাষ্ট্রের প্রকৃতি সম্পর্কে বিতর্কের সংক্ষিপ্ত পর্যালোচনা করে বলা যায় যে, এটি একটি জটিল ও বহুমাত্রিক বিষয়। একদিকে, কেন্দ্রীয়করণের পক্ষে অনেক যুক্তি রয়েছে, বিশেষত জাতীয় ঐক্য এবং অখণ্ডতা রক্ষার জন্য। অন্যদিকে, রাজ্যগুলোর স্বায়ত্তশাসনও সমান গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি তাদের সাংস্কৃতিক এবং প্রশাসনিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করে। ভবিষ্যতে, এই বিতর্কের সমাধান নির্ভর করবে ভারতীয় রাজনীতি ও সংবিধানিক সংস্কারের ওপর।

---কেন্দ্রীয় আইনসভা ও কার্যনির্বাহী---

***4) প্রশ্ন. ভারতের পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক বিশ্লেষণ কর। ১০/৫

ভারতের পার্লামেন্ট হলো দেশের সর্বোচ্চ আইনপ্রণেতা প্রতিষ্ঠান, যা সাংবিধানিকভাবে জনগণের প্রতিনিধিত্ব করে। এটি দুটি কক্ষে বিভক্ত: লোকসভা (লোকাল চেম্বার) এবং রাজ্যসভা (উপরি চেম্বার)। এই দুটি কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ উভয়ের কাজ এবং ভূমিকা দেশের আইনগত প্রক্রিয়া এবং নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ।

১. লোকসভা (Lok Sabha):

লোকসভা, ভারতের পার্লামেন্টের নিম্ন কক্ষ, জনগণের সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত। এটি মোট ৫৪৫ জন সদস্য নিয়ে গঠিত, যাদের মধ্যে ৫৪৩ জন সরাসরি নির্বাচিত হন এবং ২ জন সদস্য যোগদান করেন রাষ্ট্রপতির দ্বারা মনোনীত হওয়ার মাধ্যমে। লোকসভার সদস্যরা সাধারণ জনগণের মধ্যে থেকে নির্বাচিত হয়ে আসেন এবং তাদের প্রধান দায়িত্ব হলো সরকারের নীতি নির্ধারণে ভূমিকা রাখা। লোকসভা সরকারের কার্যক্রম, বাজেট, আইন প্রণয়ন এবং দেশের সর্বোচ্চ সংবিধানিক নির্দেশনাসমূহে আলোচনা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অংশগ্রহণ করে।

লোকসভা সরকারের উপর প্রচুর শক্তি রাখে, কারণ এর সদস্যরা জনগণের সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধি। এটি কেবল আইনের পক্ষে বা বিপক্ষে ভোট দিতে পারে না, বরং এটি সরকারকে পরীক্ষা করে দেখার ভূমিকা পালন করে। সরকারের কার্যক্রম পরিচালনা এবং বাজেট পাস করার জন্য লোকসভার সহমত অপরিহার্য।

২. রাজ্যসভা (Rajya Sabha):

রাজ্যসভা, ভারতের পার্লামেন্টের উচ্চ কক্ষ, একে উপরের কক্ষ বলা হয় এবং এর সদস্যরা রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে নির্বাচন বা মনোনীত হন। রাজ্যসভায় মোট ২৪৫ জন সদস্য থাকেন, যারা বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে নির্বাচিত বা মনোনীত হন। রাজ্যসভা মূলত সংসদে ভারসাম্য বজায় রাখতে এবং বৃহত্তর সামাজিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক বিষয়গুলিতে গঠনমূলক বিতর্ক এবং পর্যালোচনায় অংশ নিতে সহায়তা করে।

রাজ্যসভা লোকসভার তুলনায় কিছুটা পৃথক, কারণ এটি সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত নয়। তবে, এর গুরুত্ব কম নয়, কারণ এটি বিভিন্ন রাজ্য এবং অঞ্চলের মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে, এবং এটি সংসদীয় প্রক্রিয়ার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সানন্দ অনুমোদন প্রদান করে। রাজ্যসভা সাধারণত বিলের বিশদ পরীক্ষা করে এবং বাজেটের উপর আলোচনা করে, যেখানে সাধারণ জনগণের প্রাসঙ্গিকতা থাকতে পারে না।

৩. দুটি কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক:

ভারতের পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের মধ্যে সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং এটি কার্যকরভাবে দেশটির শাসন ব্যবস্থা বজায় রাখতে সহায়তা করে। লোকসভা এবং রাজ্যসভা একসাথে কাজ করে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া সমাপ্ত করতে। তাদের মধ্যে কাজের ভাগাভাগি কিছুটা আলাদা, তবে তারা একে অপরকে পরিপূরক হিসেবে কাজ করে।

• আইন প্রণয়ন: আইন প্রণয়নে লোকসভা এবং রাজ্যসভা উভয় কক্ষের সম্মতি প্রয়োজন। যদি লোকসভা একটি আইন পাস করে, তবে তা রাজ্যসভায় পেশ করা হয় এবং রাজ্যসভা সেটি পরীক্ষা করে। যদিও রাজ্যসভা লোকসভা কর্তৃক পাসকৃত আইনের উপর কোনো স্থগিতাদেশ দিতে পারে না, তবে তা সংশোধন বা পুনঃপুনরায় আলোচনা করতে পারে।

• বাজেট এবং সরকার:
লোকসভা সরকারের কার্যক্রমের প্রধান দায়িত্বে থাকে, যেখানে রাজ্যসভা বাজেট এবং সরকারের পদক্ষেপগুলির উপর পর্যালোচনা প্রদান করে। যদিও রাজ্যসভা বাজেট পাস করতে পারে না, তবে এটি বাজেটের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা ও পর্যালোচনা করতে পারে।

• পার্লামেন্টীয় কমিশন: লোকসভা ও রাজ্যসভা একত্রে পার্লামেন্টীয় কমিশন গঠন করতে পারে, যা সরকারের কার্যক্রম এবং নীতির মূল্যায়ন করতে সাহায্য করে। এমনকি কোনো বিশেষ ক্ষেত্রে যে কমিশন গঠন করা হয়, সেখানে উভয় কক্ষের সদস্যরা পরস্পরের সঙ্গে কাজ করে।

৪. সমন্বিত কাজ:

লোকসভা এবং রাজ্যসভা একসাথে দেশটির সবোচ্চ আইনী ব্যবস্থা পরিচালনা করে। যদিও লোকসভা জনগণের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব করে এবং অধিকতর ক্ষমতাশালী কক্ষ, রাজ্যসভা বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব এবং একটি বৃহত্তর দৃষ্টিভঙ্গি প্রদান করে। দুটি কক্ষ একে অপরকে চ্যালেঞ্জ করে এবং সরকারের কাজের বিষয়ে ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ নিশ্চিত করে।

উপসংহার:

ভারতের পার্লামেন্টের দুটি কক্ষের সম্পর্ক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এবং তাদের মধ্যে সমন্বয় বজায় রাখার মাধ্যমে দেশের আইনি প্রক্রিয়া সুষ্ঠু ও প্রভাবশালী হয়। লোকসভা জনগণের সরাসরি প্রতিনিধিত্ব করে এবং রাজ্যসভা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের প্রতিনিধিত্ব করে। দুটি কক্ষের সমন্বিত কাজের মাধ্যমে ভারতীয় গণতন্ত্র আরও শক্তিশালী ও কার্যকর হয়ে উঠেছে।

---বিচার বিভাগ---

***5) প্রশ্ন. ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী বর্ণনাকর। ১০

ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:

ভূমিকা: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়, যা সংবিধানের রক্ষক ও শেষ আশ্রয়স্থল হিসেবে বিবেচিত হয়। ১৯৫০ সালের ২৬ জানুয়ারি সংবিধান কার্যকর হওয়ার পর সুপ্রিম কোর্ট তার কার্যক্রম শুরু করে। এটি বিচার বিভাগের সর্বোচ্চ স্তর এবং আইন, সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকার সংক্রান্ত বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদান করে। সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় সুস্পষ্টভাবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সুপ্রিম কোর্টের গঠন: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ও অন্যান্য বিচারপতিরা রাষ্ট্রপতির দ্বারা নিযুক্ত হন। সংবিধানের ১২৪ নম্বর ধারার অধীনে সর্বোচ্চ আদালতের বিচারপতিদের সংখ্যা রাষ্ট্রপতির দ্বারা নির্ধারিত হয়।

সুপ্রিম কোর্টের প্রধান ক্ষমতা ও কার্যাবলী: ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী সংবিধানের বিভিন্ন ধারায় বর্ণিত হয়েছে। নিচে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষমতা ও কার্যাবলীর সংক্ষিপ্ত বিবরণ দেওয়া হলো:

১.সংবিধান রক্ষক হিসেবে ভূমিকা: সুপ্রিম কোর্ট ভারতীয় সংবিধানের রক্ষক ও ব্যাখ্যাকারী হিসেবে কাজ করে। এটি সংবিধানের মৌলিক কাঠামো বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারে।

২.মূল বিচারিক ক্ষমতা (Original Jurisdiction): সংবিধানের ১৩১ নম্বর ধারায় সুপ্রিম কোর্টের মূল বিচারিক ক্ষমতা সংজ্ঞায়িত হয়েছে। যদি কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে বা বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে কোনো বিরোধ সৃষ্টি হয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট সরাসরি সেই মামলা গ্রহণ করতে পারে।

৩.আপিল বিভাগের ক্ষমতা (Appellate Jurisdiction): সংবিধানের ১৩২, ১৩৩ ও ১৩৪ নম্বর ধারায় সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের ক্ষমতা নির্ধারিত হয়েছে। নিম্ন আদালতে সিদ্ধান্তপ্রাপ্ত ফৌজদারি, দেওয়ানি ও সংবিধান সংক্রান্ত মামলাগুলি সুপ্রিম কোর্টে আপিল করা যায়।

৪.পরামর্শমূলক ক্ষমতা (Advisory Jurisdiction): সংবিধানের ১৪৩ নম্বর ধারায় রাষ্ট্রপতিকে সুপ্রিম কোর্টের পরামর্শ নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। রাষ্ট্রপতি কোনো সাংবিধানিক বা আইনি বিষয়ে সুপ্রিম কোর্টের মতামত চাইতে পারেন।

৫.মৌলিক অধিকার সংরক্ষণ: সংবিধানের ৩২ নম্বর ধারা সুপ্রিম কোর্টকে মৌলিক অধিকার রক্ষার ক্ষমতা প্রদান করেছে। যদি কোনো নাগরিকের মৌলিক অধিকার লঙ্ঘিত হয়, তবে সুপ্রিম কোর্ট হস্তক্ষেপ করতে পারে এবং প্রয়োজনীয় আদেশ দিতে পারে।

৬.বিচারিক পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা (Judicial Review): সংবিধানের ১৩ নম্বর ধারার অধীনে সুপ্রিম কোর্টের বিচারিক পুনর্বিবেচনার ক্ষমতা রয়েছে। যদি কোনো আইন সংবিধান-বিরোধী হয়, তাহলে সুপ্রিম কোর্ট সেই আইন বাতিল করতে পারে।

৭.বিশেষ ছাড়পত্র (Special Leave Petition - SLP): সংবিধানের ১৩৬ নম্বর ধারার অধীনে সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ ছাড়পত্রের ভিত্তিতে যে কোনো আদালতের রায় পুনর্বিবেচনা করতে পারে।

৮.উচ্চ আদালতগুলোর তত্ত্বাবধান: সুপ্রিম কোর্ট ভারতের সমস্ত উচ্চ আদালতের উপর তত্ত্বাবধান রাখে এবং আইনি বিষয়ে দিকনির্দেশনা প্রদান করে।

৯.চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত প্রদানকারী সংস্থা: সুপ্রিম কোর্টের দেওয়া রায় চূড়ান্ত এবং এটি অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক। কোনো আদালত সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্তকে পাল্টাতে পারে না।

১০.নির্বাচনী বিরোধ নিষ্পত্তি: সংবিধানের ৭১ নম্বর ধারা অনুযায়ী রাষ্ট্রপতি ও উপরাষ্ট্রপতির নির্বাচনের বিষয়ে কোনো বিরোধ হলে সুপ্রিম কোর্ট সেই মামলা গ্রহণ ও নিষ্পত্তি করতে পারে।

উপসংহার: ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গণতন্ত্রের রক্ষক এবং সংবিধানের সর্বোচ্চ ব্যাখ্যাকারী হিসেবে কাজ করে। এটি মৌলিক অধিকার রক্ষা, আইন সংক্রান্ত বিরোধ নিষ্পত্তি এবং ন্যায়বিচার নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের বিচার ব্যবস্থার মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করে। এর ক্ষমতা ও কার্যাবলী ভারতীয় আইনের শাসনকে সুসংহত করে এবং সাধারণ নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রাপ্তির অধিকার নিশ্চিত করে।

Important Long Questions for B.A 1st Semester Political Science

Kalyani University Political Science Minor Questions and Answers

Most Repeated Long Questions

Exam-Oriented Political Science Long Questions

***6) প্রশ্ন.হাইকোর্ট কি কি আজ্ঞালেখ জারি করতে পারে সংক্ষেপে আলোচনা কর। ৫

ভারতের সংবিধানে মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করতে এবং নাগরিকদের ন্যায়বিচার প্রদান করতে আদালতকে কিছু বিশেষ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। এই ক্ষমতার মধ্যে অন্যতম হলো আজ্ঞালেখ (Writ) জারি করার ক্ষমতা। সংবিধানের ৩২ ও ২২৬ অনুচ্ছেদ অনুসারে সুপ্রিম কোর্ট ও হাইকোর্ট এই ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারে।

হাইকোর্ট নিম্নলিখিত পাঁচ প্রকারের আজ্ঞালেখ জারি করতে পারে—

১.হেবিয়াস কর্পাস (Habeas Corpus):

হেবিয়াস কর্পাস লাতিন শব্দ, যার অর্থ “দেহ উপস্থিত করো”। যদি কোনো ব্যক্তি অবৈধভাবে আটক বা গ্রেপ্তার হয়, তবে এই আজ্ঞালেখের মাধ্যমে তাকে আদালতে হাজির করে গ্রেপ্তারের আইনগত বৈধতা যাচাই করা হয়। যদি আদালত দেখে যে আটক বা গ্রেপ্তার অবৈধ, তাহলে সে ব্যক্তিকে মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দেয়। এটি নাগরিক স্বাধীনতার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রক্ষাকবচ।

২.ম্যান্ডামাস (Mandamus):

ম্যান্ডামাস শব্দের অর্থ “আমরা আদেশ দিচ্ছি”। এটি তখন জারি করা হয় যখন কোনো সরকারী কর্তৃপক্ষ বা সংস্থা তাদের আইনি দায়িত্ব পালন করতে ব্যর্থ হয়। এই রিটের মাধ্যমে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে তাদের দায়িত্ব পালনের আদেশ দেয়। তবে এটি ব্যক্তিগত কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে জারি করা হয় না।

৩.প্রোহিবিশন (Prohibition):

প্রোহিবিশন শব্দের অর্থ “নিষেধাজ্ঞা”। এটি নিম্ন আদালত বা প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনালের বিরুদ্ধে জারি করা হয় যখন তারা তাদের আইনি ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে কাজ করতে থাকে। এই রিটের মাধ্যমে হাইকোর্ট সংশ্লিষ্ট আদালতকে কোনো বেআইনি কার্যক্রম চালানো থেকে বিরত রাখে। সাধারণত, এটি তখন জারি করা হয় যখন বিচারাধীন কোনো মামলা নিম্ন আদালতে চলমান থাকে এবং সেখানে আইনি সীমার লঙ্ঘন হয়।

৪.সার্টিওরারি (Certiorari):

সার্টিওরারি শব্দের অর্থ “যথাযথভাবে নিশ্চিত করা”। যখন নিম্ন আদালত বা ট্রাইব্যুনাল তাদের ক্ষমতার সীমা অতিক্রম করে কোনো সিদ্ধান্ত নেয় বা বেআইনি কার্যক্রম পরিচালনা করে, তখন হাইকোর্ট এই রিটের মাধ্যমে ওই সিদ্ধান্ত বাতিল করতে পারে। এটি মূলত প্রোহিবিশনের পরবর্তী ধাপ হিসেবে কাজ করে।

৫.কো ওয়ারান্টো (Quo Warranto):

কো ওয়ারান্টো শব্দের অর্থ “কোন কর্তৃত্বের বলে”। এটি তখন জারি করা হয় যখন কোনো ব্যক্তি বেআইনিভাবে সরকারি পদ দখল করে আছে। হাইকোর্ট এই রিটের মাধ্যমে জানতে চায়, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি কীভাবে এবং কোন আইনি ভিত্তিতে ওই পদে অধিষ্ঠিত হয়েছেন। যদি দেখা যায় যে তিনি যোগ্য নন বা অবৈধভাবে পদ দখল করেছেন, তাহলে তাকে সেই পদ থেকে অপসারণের নির্দেশ দেওয়া হয়।

উপসংহার:

হাইকোর্টের এই পাঁচটি আজ্ঞালেখ মৌলিক অধিকার রক্ষা, প্রশাসনিক কার্যকারিতা নিশ্চিতকরণ এবং বিচার ব্যবস্থার সঠিক প্রয়োগের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এগুলো নাগরিকদের অবিচার ও অবৈধ কর্মকাণ্ড থেকে রক্ষা করে এবং আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সহায়তা করে। ভারতীয় গণতন্ত্রের মূল ভিত্তিগুলোর একটি হলো এই আজ্ঞালেখ ব্যবস্থাপনা, যা জনগণের ন্যায়বিচারের অধিকার সংরক্ষণ করে।

এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।

• সাজেশন পিডিএফ পেজের পেজ সংখ্যা 45 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনের বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.

Leave a Comment