• এই সাজেশনের প্রশ্ন সংখ্যা 24 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
UNIT-1 ভারতীয় পার্লামেন্ট ও আইন প্রণয়ন---
*****1) প্রশ্ন. লোকসভার অধ্যক্ষের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি লেখ। 10/5
উত্তর: ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার অধ্যক্ষ (Speaker) একজন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদাধিকারী। তিনি শুধুমাত্র সভার সভাপতিই নন, বরং- সংসদীয় গণতন্ত্রের মূল স্তম্ভ হিসেবে কাজ করেন। লোকসভার অধ্যক্ষের দায়িত্ব ও কর্তব্যগুলি অত্যন্ত ব্যাপক এবং সংবেদনশীল। তাঁর কাজগুলি সংসদের কার্যক্রমকে সুশৃঙ্খল ও ন্যায়সঙ্গতভাবে পরিচালনা করতে সাহায্য করে। নিম্নে লোকসভার অধ্যক্ষের কিছু গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলি আলোচনা করা হলো:
১. সভার কার্যক্রম পরিচালনা: লোকসভার অধ্যক্ষের প্রধান দায়িত্ব হলো লোকসভার সভাগুলিকে সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা। তিনি সভার সময় নির্ধারণ, আলোচনার বিষয়বস্তু নির্ধারণ, এবং সদস্যদের মধ্যে বিতর্ক পরিচালনা করেন। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয় এবং তিনি সভার শৃঙ্খলা বজায় রাখেন।
২. শৃঙ্খলা বজায় রাখা: লোকসভার অধ্যক্ষ সভার শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য দায়ী। যদি কোনো সদস্য সংসদের নিয়ম ভঙ্গ করেন বা অশোভন আচরণ করেন, তাহলে অধ্যক্ষ তাঁকে সতর্ক করতে পারেন, এমনকি তাঁকে সভা থেকে বহিষ্কারও করতে পারেন। অধ্যক্ষের এই ক্ষমতা সংসদীয় কার্যক্রমকে সুশৃঙ্খল রাখে।
৩. সিদ্ধান্ত গ্রহণ: লোকসভার অধ্যক্ষ বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি সভায় উত্থাপিত বিভিন্ন প্রস্তাব ও সংশোধনীর উপর রায় দেন। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয় এবং তা সংসদীয় প্রক্রিয়াকে এগিয়ে নেয়।
৪. সংসদীয় কমিটিগুলির নিয়োগ: অধ্যক্ষ বিভিন্ন সংসদীয় কমিটির সদস্যদের নিয়োগের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি কমিটির সভাপতি ও সদস্যদের নিয়োগ করেন এবং তাদের কাজকর্ম তদারক করেন। এই কমিটিগুলি সংসদীয় কার্যক্রমের বিভিন্ন দিক পর্যালোচনা করে এবং রিপোর্ট প্রদান করে।
৫. সংসদীয় বিশেষাধিকার রক্ষা: লোকসভার অধ্যক্ষ সংসদ ও সংসদ সদস্যদের বিশেষাধিকার রক্ষার দায়িত্বে থাকেন। যদি কোনো সংসদ সদস্যের বিশেষাধিকার ক্ষুণ্ণ হয়, তাহলে অধ্যক্ষ সেই বিষয়ে হস্তক্ষেপ করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
৬. সংসদীয় প্রক্রিয়া সম্পর্কিত প্রশ্নের সমাধান: সংসদীয় প্রক্রিয়া সম্পর্কিত কোনো প্রশ্ন বা দ্বন্দ্ব দেখা দিলে অধ্যক্ষ সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেন। তাঁর সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত বলে বিবেচিত হয় এবং তা সংসদীয় কার্যক্রমকে এগিয়ে নেয়।
৭. সংসদীয় কার্যবিবরণী প্রকাশ: অধ্যক্ষের নির্দেশে লোকসভার কার্যবিবরণী (Proceedings) প্রকাশিত হয়। এই কার্যবিবরণীতে সংসদের প্রতিদিনের কার্যক্রমের বিস্তারিত বিবরণ থাকে। এটি সংসদীয় কার্যক্রমের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল হিসেবে বিবেচিত হয়।
৮. সংসদ সদস্যদের মধ্যে বিরোধ নিষ্পত্তি: সংসদ সদস্যদের মধ্যে কোনো বিরোধ দেখা দিলে অধ্যক্ষ সেই বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য হস্তক্ষেপ করেন। তিনি উভয় পক্ষের যুক্তি শুনেন এবং একটি ন্যায়সঙ্গত সিদ্ধান্ত প্রদান করেন।
৯. সংসদীয় নিয়মাবলি প্রয়োগ: লোকসভার অধ্যক্ষ সংসদীয় নিয়মাবলি প্রয়োগের দায়িত্বে থাকেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে সংসদের সকল কার্যক্রম সংবিধান ও সংসদীয় নিয়মাবলি অনুযায়ী পরিচালিত হচ্ছে।
১০. সংসদীয় গণতন্ত্র রক্ষা: লোকসভার অধ্যক্ষ সংসদীয় গণতন্ত্র রক্ষার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে সংসদীয় কার্যক্রমে সংখ্যাগরিষ্ঠ ও বিরোধী দল উভয়েরই মতামত প্রকাশের সুযোগ থাকে।
১১. সংসদীয় বিতর্কে নিরপেক্ষতা: অধ্যক্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব হলো সংসদীয় বিতর্কে নিরপেক্ষতা বজায় রাখা। তিনি কোনো বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর পক্ষে অবস্থান নেন না এবং সকল সদস্যের প্রতি সমান আচরণ করেন।
১২. সংসদীয় কার্যক্রমে স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা: অধ্যক্ষ নিশ্চিত করেন যে সংসদের সকল কার্যক্রম স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক হয়। তিনি সংসদীয় কার্যক্রমের স্বচ্ছতা বজায় রাখার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।
১৩. সংসদ সদস্যদের প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনা: নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের জন্য অধ্যক্ষ প্রশিক্ষণ ও নির্দেশনার ব্যবস্থা করেন। তিনি তাদের সংসদীয় প্রক্রিয়া ও নিয়মাবলি সম্পর্কে অবহিত করেন।
১৪. সংসদীয় কার্যক্রমের উন্নয়ন: অধ্যক্ষ সংসদীয় কার্যক্রমের উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেন। তিনি নতুন প্রযুক্তি ও পদ্ধতি প্রয়োগ করে সংসদীয় কার্যক্রমকে আরও দক্ষ ও কার্যকর করে তোলেন।
১৫. সংসদীয় ঐতিহ্য রক্ষা: লোকসভার অধ্যক্ষ সংসদীয় ঐতিহ্য ও মূল্যবোধ রক্ষার দায়িত্বে থাকেন। তিনি নিশ্চিত করেন যে সংসদীয় কার্যক্রমে ঐতিহ্য ও মূল্যবোধের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা হয়।
উপসংহার:
লোকসভার অধ্যক্ষের ভূমিকা শুধুমাত্র সভাপতিত্বের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়। তিনি সংসদীয় গণতন্ত্রের রক্ষক হিসেবে কাজ করেন এবং সংসদের কার্যক্রমকে সুশৃঙ্খল, ন্যায়সঙ্গত ও স্বচ্ছভাবে পরিচালনা করেন। তাঁর কাজগুলি সংসদীয় প্রক্রিয়াকে সুষ্ঠুভাবে এগিয়ে নেয় এবং গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করে। এই কারণে লোকসভার অধ্যক্ষের পদটি অত্যন্ত সম্মানজনক এবং দায়িত্বপূর্ণ।
*****2) প্রশ্ন. ভারতের সংসদের উভয় কক্ষের সাংবিধানিক সম্পর্ক সংক্ষেপে পর্যালোচনা কর। ৫
ভারতের সংসদ একটি দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভা, যা লো্কসভা (নিম্নকক্ষ) এবং রাজ্যসভা (উচ্চকক্ষ) নিয়ে গঠিত। সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৭৯ অনুযায়ী, সংসদ রাষ্ট্রপতি, লো্কসভা এবং রাজ্যসভা নিয়ে গঠিত। এই দুটি কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক সম্পর্ক জটিল এবং ভারসাম্যপূর্ণ, যা ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। এই নিবন্ধে ভারতের সংসদের উভয় কক্ষের সাংবিধানিক সম্পর্ক সংক্ষেপে পর্যালোচনা করা হবে।
১. গঠন ও প্রতিনিধিত্ব:
লো্কসভা এবং রাজ্যসভার গঠন ও প্রতিনিধিত্বের মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য রয়েছে। লো্কসভা সরাসরি জনগণের দ্বারা নির্বাচিত প্রতিনিধিদের নিয়ে গঠিত, যা জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্বকে নির্দেশ করে। অন্যদিকে, রাজ্যসভা পরোক্ষভাবে নির্বাচিত সদস্যদের নিয়ে গঠিত, যেখানে রাজ্য বিধানসভাগুলির সদস্যরা রাজ্যসভার সদস্যদের নির্বাচন করেন। রাজ্যসভা রাজ্যগুলির প্রতিনিধিত্ব করে এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করে।
২. আইন প্রণয়নের ক্ষমতা:
সংসদের উভয় কক্ষই আইন প্রণয়নের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সাধারণ বিল উভয় কক্ষে পাস হওয়া আবশ্যক। তবে, অর্থ বিলের ক্ষেত্রে লো্কসভার বিশেষ ক্ষমতা রয়েছে। অর্থ বিল শুধুমাত্র লো্কসভায় উত্থাপন করা যায় এবং রাজ্যসভা এতে পরিবর্তন বা সংশোধনের পরামর্শ দিতে পারে, কিন্তু তা বাতিল করতে পারে না। এই ব্যবস্থা লো্কসভাকে অর্থনৈতিক বিষয়ে প্রাধান্য দেয়।
৩. মন্ত্রিসভা গঠন:
মন্ত্রিসভা গঠনের ক্ষেত্রে লো্কসভার বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং তার মন্ত্রিসভা লো্কসভার আস্থাভাজন হওয়া আবশ্যক। রাজ্যসভার সদস্যরাও মন্ত্রী হতে পারেন, তবে তাদের লো্কসভার সদস্য হওয়ার প্রয়োজন নেই। এই ব্যবস্থা লো্কসভাকে নির্বাহী ক্ষমতার কেন্দ্রবিন্দু করে তোলে।
৪. রাজ্যসভার বিশেষ ভূমিকা:
রাজ্যসভা যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে শক্তিশালী করার জন্য বিশেষ ভূমিকা পালন করে। এটি রাজ্যগুলির স্বার্থ রক্ষা করে এবং জাতীয় নীতিনির্ধারণে তাদের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করে। রাজ্যসভা কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সমন্বয় সাধনের একটি প্ল্যাটফর্ম হিসেবে কাজ করে।
৫. সাংবিধানিক সংশোধন:
সাংবিধানিক সংশোধনীর ক্ষেত্রে উভয় কক্ষের সমান ক্ষমতা রয়েছে। সাংবিধানিক সংশোধন বিল উভয় কক্ষে বিশেষ সংখ্যাগরিষ্ঠতায় পাস হওয়া আবশ্যক। এই ব্যবস্থা সংবিধানের স্থিতিশীলতা এবং যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে রক্ষা করে।
৬. সমন্বয় ও ভারসাম্য:
সংসদের উভয় কক্ষের মধ্যে সমন্বয় ও ভারসাম্য বজায় রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লো্কসভা জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্ব করে, অন্যদিকে রাজ্যসভা রাজ্যগুলির স্বার্থ রক্ষা করে। এই দ্বৈত কাঠামো ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে।
৭. বিরোধ নিরসন:
উভয় কক্ষের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে যৌথ অধিবেশনের মাধ্যমে তা নিরসন করা হয়। লো্কসভার সদস্য সংখ্যা বেশি হওয়ায় যৌথ অধিবেশনে তাদের প্রাধান্য থাকে। তবে, এই ব্যবস্থা বিরোধ নিরসনের একটি গণতান্ত্রিক পদ্ধতি প্রদান করে।
৮. বিশেষ দায়িত্ব ও ক্ষমতা:
রাজ্যসভার কিছু বিশেষ দায়িত্ব ও ক্ষমতা রয়েছে, যেমন নতুন অল-ইন্ডিয়া সার্ভিস গঠনের সুপারিশ করা। এই ক্ষমতা রাজ্যসভাকে জাতীয় নীতিনির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সক্ষম করে।
উপসংহার:
ভারতের সংসদের উভয় কক্ষের মধ্যে সাংবিধানিক সম্পর্ক জটিল এবং ভারসাম্যপূর্ণ। লো্কসভা জনগণের প্রত্যক্ষ প্রতিনিধিত্ব করে, অন্যদিকে রাজ্যসভা রাজ্যগুলির স্বার্থ রক্ষা করে। এই দ্বৈত কাঠামো ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় এবং গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে। উভয় কক্ষের মধ্যে সমন্বয় ও সহযোগিতা ভারতের সংসদীয় গণতন্ত্রের সাফল্যের চাবিকাঠি।
UNIT-2 জনপ্রতিনিধিদের ক্ষমতা ও কার্যাবলী---
*****3) প্রশ্ন. পঞ্চায়েত সমিতির কার্যাবলী ব্যাখ্যা কর। ৫
উত্তর: পঞ্চায়েত সমিতি হল স্থানীয় স্বায়ত্তশাসনের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তর, যা গ্রামীণ উন্নয়ন ও প্রশাসনের সাথে জড়িত। এটি ভারতের পঞ্চায়েতি রাজ ব্যবস্থার দ্বিতীয় স্তর, যা ব্লক বা তহসিল পর্যায়ে কাজ করে। পঞ্চায়েত সমিতির মূল উদ্দেশ্য হল গ্রামীণ এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা। এটি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কার্যক্রমের সমন্বয় সাধন করে এবং উন্নয়নমূলক প্রকল্পগুলি বাস্তবায়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। নিম্নে পঞ্চায়েত সমিতির কার্যাবলী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হল:
১. গ্রামীণ উন্নয়ন পরিকল্পনা প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন: পঞ্চায়েত সমিতির প্রধান কাজ হল গ্রামীণ উন্নয়নের জন্য পরিকল্পনা প্রণয়ন করা এবং তা বাস্তবায়ন করা। এটি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প, যেমন কৃষি উন্নয়ন, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পানীয় জল সরবরাহ, সড়ক নির্মাণ ইত্যাদি বিষয়ে পরিকল্পনা তৈরি করে। পঞ্চায়েত সমিতি এই পরিকল্পনাগুলি বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় সম্পদ ও অর্থের ব্যবস্থা করে।
২. কৃষি ও সমবায় উন্নয়ন: কৃষি হল গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিত্তি। পঞ্চায়েত সমিতি কৃষকদের উন্নত বীজ, সার, কীটনাশক এবং আধুনিক কৃষি যন্ত্রপাতি সরবরাহ করে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এছাড়াও, এটি সমবায় সমিতিগুলির মাধ্যমে কৃষকদের সংগঠিত করে এবং তাদের আর্থিক সহায়তা প্রদান করে।
৩. শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়ন: পঞ্চায়েত সমিতি গ্রামীণ এলাকায় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের উন্নয়ন, শিক্ষক নিয়োগ, স্কুল ভবন নির্মাণ এবং শিক্ষা উপকরণ সরবরাহের দায়িত্বে থাকে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে, এটি প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্র, স্বাস্থ্য শিবির এবং টিকা কর্মসূচির আয়োজন করে।
৪. পানীয় জল ও স্যানিটেশন ব্যবস্থা: পঞ্চায়েত সমিতি গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জল সরবরাহ ও স্যানিটেশন ব্যবস্থার উন্নয়নে কাজ করে। এটি নলকূপ স্থাপন, জলাশয় সংস্কার এবং পয়ঃনিষ্কাশন ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রকল্প গ্রহণ করে। এছাড়াও, এটি জনসাধারণকে স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে সচেতন করে তোলে।
৫. সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন: গ্রামীণ এলাকায় সড়ক ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন পঞ্চায়েত সমিতির একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব। এটি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ, সংস্কার এবং রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে। এছাড়াও, এটি গ্রামীণ এলাকায় পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নে ভূমিকা রাখে।
৬. মহিলা ও শিশু উন্নয়ন: পঞ্চায়েত সমিতি মহিলা ও শিশু উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি মহিলাদের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন, প্রশিক্ষণ প্রদান এবং আর্থিক সহায়তা প্রদান করে। শিশুদের জন্য এটি পুষ্টিকর খাবার, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করে।
৭. সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন: পঞ্চায়েত সমিতি সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা এবং দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর ক্ষমতায়নের জন্য কাজ করে। এটি তফসিলি জাতি, তফসিলি উপজাতি এবং অন্যান্য পিছিয়ে পড়া সম্প্রদায়ের উন্নয়নে বিশেষ প্রকল্প গ্রহণ করে। এছাড়াও, এটি নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার রক্ষায় ভূমিকা পালন করে।
৮. পরিবেশ সংরক্ষণ: পঞ্চায়েত সমিতি পরিবেশ সংরক্ষণ ও উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করে। এটি বনায়ন, জল সংরক্ষণ, মৃত্তিকা সংরক্ষণ এবং বর্জ্য ব্যবস্থাপনার মতো প্রকল্প বাস্তবায়ন করে। এছাড়াও, এটি জনসাধারণকে পরিবেশ সচেতনতা সম্পর্কে শিক্ষা প্রদান করে।
৯. আপদকালীন ব্যবস্থাপনা: প্রাকৃতিক দুর্যোগ বা অন্য কোনও জরুরি অবস্থায় পঞ্চায়েত সমিতি ত্রাণ ও পুনর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে। এটি দুর্গতদের জন্য আশ্রয়, খাদ্য, ওষুধ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় সরবরাহের ব্যবস্থা করে।
১০. অর্থনৈতিক উন্নয়ন: পঞ্চায়েত সমিতি গ্রামীণ এলাকার অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য বিভিন্ন কর্মসূচি গ্রহণ করে। এটি ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্পের উন্নয়ন, কর্মসংস্থান সৃষ্টি এবং আয় বৃদ্ধির জন্য প্রকল্প বাস্তবায়ন করে।
১ ১. জনসচেতনতা ও প্রশিক্ষণ: পঞ্চায়েত সমিতি জনসাধারণকে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি সম্পর্কে সচেতন করে তোলে এবং তাদের প্রশিক্ষণ প্রদান করে। এটি কৃষি, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে কর্মশালা ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির আয়োজন করে।
১২. তহবিল সংগ্রহ ও বণ্টন: পঞ্চায়েত সমিতি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য তহবিল সংগ্রহ করে এবং তা সঠিকভাবে বণ্টন করে। এটি সরকারি অনুদান, স্থানীয় কর এবং অন্যান্য উৎস থেকে তহবিল সংগ্রহ করে।
১৩. তদারকি ও মূল্যায়ন: পঞ্চায়েত সমিতি গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির কার্যক্রম তদারকি করে এবং তাদের কার্যকারিতা মূল্যায়ন করে। এটি উন্নয়ন প্রকল্পগুলির অগ্রগতি নিরীক্ষণ করে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব করে।
১৪. সামাজিক সম্প্রীতি রক্ষা: পঞ্চায়েত সমিতি গ্রামীণ এলাকায় সামাজিক সম্প্রীতি ও শান্তি বজায় রাখতে কাজ করে। এটি সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা এবং সামাজিক সংঘাত নিরসনে ভূমিকা পালন করে।
১৫. নাগরিক সেবা প্রদান: পঞ্চায়েত সমিতি স্থানীয় জনগণকে বিভিন্ন নাগরিক সেবা প্রদান করে। এটি জন্ম ও মৃত্যু নিবন্ধন, বিবাহ নিবন্ধন, বাসস্থান সংক্রান্ত সনদ ইত্যাদি সেবা প্রদান করে।
উপসংহার:
পঞ্চায়েত সমিতি গ্রামীণ উন্নয়নের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। এটি স্থানীয় জনগণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে গ্রামীণ এলাকার সামগ্রিক উন্নয়ন নিশ্চিত করে। পঞ্চায়েত সমিতির কার্যাবলী শুধুমাত্র উন্নয়নমূলক প্রকল্প বাস্তবায়নের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়, বরং এটি সামাজিক ন্যায়বিচার, পরিবেশ সংরক্ষণ এবং জনসচেতনতা বৃদ্ধির মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলিও অন্তর্ভুক্ত করে। পঞ্চায়েত সমিতির সফল কার্যক্রম গ্রামীণ ভারতের উন্নয়নে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে।
UNIT-3 কমিটি ব্যবস্থা---
*****4) প্রশ্ন. ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন কমিটিগুলির ভূমিকার মূল্যায়ন কর। ১০
ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া একটি জটিল ও বহুমুখী প্রক্রিয়া, যেখানে বিভিন্ন কমিটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সংসদীয় কমিটিগুলি আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়াকে সুসংহত, স্বচ্ছ ও কার্যকর করে তোলে। এই কমিটিগুলি সংসদের সদস্যদের নিয়ে গঠিত হয় এবং তাদের মূল কাজ হলো প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন দিক বিশ্লেষণ করা, সংশোধনী প্রস্তাব করা এবং আইনের গুণগত মান নিশ্চিত করা। এই প্রবন্ধে ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় বিভিন্ন কমিটির ভূমিকা ও গুরুত্ব নিয়ে আলোচনা করা হবে।
১. সংসদীয় কমিটির ধারণা ও প্রকারভেদ:
সংসদীয় কমিটি হলো সংসদের সদস্যদের নিয়ে গঠিত একটি ছোট দল, যারা নির্দিষ্ট বিষয় বা আইন নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে। ভারতীয় সংসদে প্রধানত দু ধরনের কমিটি রয়েছে:
• স্থায়ী কমিটি (Standing Committee): এই কমিটিগুলি স্থায়ীভাবে গঠিত হয় এবং নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু নিয়ে কাজ করে। যেমন—আইন বিষয়ক কমিটি, অর্থ কমিটি, প্রতিরক্ষা কমিটি ইত্যাদি।
• অস্থায়ী কমিটি (Ad hoc Committee): এই কমিটিগুলি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে গঠিত হয় এবং সেই উদ্দেশ্য পূরণের পর বিলুপ্ত হয়ে যায়। যেমন—প্রস্তাবিত আইন নিয়ে গঠিত বিশেষ কমিটি।
২. আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিটির ভূমিকা:
ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিটিগুলির ভূমিকা নিম্নরূপ:
ক) আইনের প্রাথমিক পর্যালোচনা: সংসদে কোনো আইন প্রস্তাব উত্থাপিত হলে, তা প্রাথমিকভাবে সংশ্লিষ্ট কমিটির কাছে পাঠানো হয়। কমিটি আইনের বিভিন্ন দিক নিয়ে আলোচনা করে এবং প্রস্তাবিত আইনের সম্ভাব্য প্রভাব বিশ্লেষণ করে। এই প্রক্রিয়ায় কমিটি আইনের ত্রুটি ও সীমাবদ্ধতা চিহ্নিত করে। খ) সংশোধনী প্রস্তাবনা: কমিটি প্রস্তাবিত আইনের বিভিন্ন ধারা ও উপধারা নিয়ে বিশদ আলোচনা করে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব করে। এই সংশোধনী প্রস্তাবগুলি আইনের গুণগত মান উন্নত করে এবং আইনকে আরও সুসংহত করে তোলে।
গ) বিশেষজ্ঞ মতামত গ্রহণ: কমিটি প্রস্তাবিত আইন নিয়ে সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি এবং অন্যান্য স্টেকহোল্ডারদের মতামত গ্রহণ করে। এই প্রক্রিয়ায় আইনটি সমাজের বিভিন্ন শ্রেণি ও গোষ্ঠীর প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণ করে। ঘ) প্রতিবেদন প্রস্তুত ও উপস্থাপন: কমিটি তাদের আলোচনা ও বিশ্লেষণের ভিত্তিতে একটি প্রতিবেদন প্রস্তুত করে এবং তা সংসদের কাছে উপস্থাপন করে। এই প্রতিবেদনে কমিটির সুপারিশ ও সংশোধনী প্রস্তাব অন্তর্ভুক্ত থাকে। সংসদ এই প্রতিবেদন বিবেচনা করে এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করে।
৩. কমিটির গুরুত্ব:
ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিটির গুরুত্ব অপরিসীম। নিম্নে এর কিছু দিক উল্লেখ করা হলো:
ক) গুণগত মান নিশ্চিতকরণ: কমিটি প্রস্তাবিত আইনের গুণগত মান নিশ্চিত করে। তারা আইনের প্রতিটি ধারা ও উপধারা নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করে এবং প্রয়োজনীয় সংশোধনী প্রস্তাব করে। এই প্রক্রিয়ায় আইনটি আরও সুসংহত ও কার্যকর হয়। খ) স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা: কমিটির কাজ সংসদীয় প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ ও জবাবদিহিতামূলক করে তোলে। তারা প্রস্তাবিত আইন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করে এবং তাদের প্রতিবেদন সংসদের কাছে উপস্থাপন করে। এই প্রক্রিয়ায় আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া জনগণের কাছে আরও স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়। গ) বিশেষজ্ঞ মতামতের সংযোজন: কমিটি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের মতামত গ্রহণ করে এবং তা আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় সংযোজন করে। এই প্রক্রিয়ায় আইনটি আরও যুক্তিসঙ্গত ও বাস্তবসম্মত হয়। ঘ) সময় সাশ্রয়: সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়া সময়সাপেক্ষ। কমিটি প্রস্তাবিত আইন নিয়ে প্রাথমিক আলোচনা ও বিশ্লেষণ করে এবং সংসদের মূল সভায় আলোচনার সময় সাশ্রয় করে।
৪. চ্যালেঞ্জ ও সমাধান:
যদিও কমিটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তবুও কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে:
• সময়ের অভাব: অনেক সময় কমিটির কাছে পর্যাপ্ত সময় থাকে না আইন নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করার জন্য। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কমিটির কাজের সময়সীমা বাড়ানো প্রয়োজন।
• রাজনৈতিক প্রভাব: কখনো কখনো রাজনৈতিক প্রভাব কমিটির কাজে বাধা সৃষ্টি করে। এই সমস্যা সমাধানের জন্য কমিটির স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করা প্রয়োজন।
উপসংহার:
ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিটির ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তারা প্রস্তাবিত আইন নিয়ে গভীরভাবে আলোচনা করে, সংশোধনী প্রস্তাব করে এবং আইনের গুণগত মান নিশ্চিত করে। কমিটির কাজ সংসদীয় প্রক্রিয়াকে আরও স্বচ্ছ, জবাবদিহিতামূলক ও কার্যকর করে তোলে। তবে কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যা সমাধান করা গেলে কমিটির ভূমিকা আরও কার্যকর হবে। সামগ্রিকভাবে, ভারতীয় সংসদে আইন প্রণয়ন প্রক্রিয়ায় কমিটির ভূমিকা অপরিহার্য এবং এটি গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়াকে শক্তিশালী করে।
UNIT-4 সংসদীয় বাজেট প্রণয়ন---
*****5) প্রশ্ন. রেল বাজেটের উপর একটি সংক্ষিপ্ত টীকা লেখ। ৫
উত্তর: রেল বাজেট হলো একটি দেশের রেলওয়ে ব্যবস্থার আর্থিক পরিকল্পনা ও বরাদ্দের একটি গুরুত্বপূর্ণ দলিল। এটি সাধারণত বার্ষিক ভিত্তিতে প্রণয়ন করা হয় এবং দেশের রেলওয়ে মন্ত্রণালয় বা সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ দ্বারা উপস্থাপন করা হয়। রেল বাজেটের মাধ্যমে রেলওয়ে সংক্রান্ত আয়-ব্যয়, উন্নয়ন প্রকল্প, নতুন পরিষেবা চালু, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার, এবং যাত্রীসুবিধা বৃদ্ধির মতো বিষয়গুলি পরিকল্পনা করা হয়। এটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, কারণ রেলওয়ে পরিবহন খাতের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহন সম্পন্ন হয়।
রেল বাজেটের উদ্দেশ্য:
১. রেলওয়ে অবকাঠামো উন্নয়ন: রেল বাজেটের মাধ্যমে রেলওয়ে ট্র্যাক, স্টেশন, ব্রিজ, টানেল, এবং অন্যান্য অবকাঠামোর উন্নয়ন ও সংস্কারের জন্য অর্থ বরাদ্দ করা হয়। এটি রেলওয়ে নেটওয়ার্কের সম্প্রসারণ এবং আধুনিকীকরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
২. নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু: রেল বাজেটে নতুন ট্রেন পরিষেবা চালু করার পরিকল্পনা করা হয়। এটি যাত্রীদের সুবিধা বৃদ্ধি এবং রেলওয়ের আয় বৃদ্ধিতে সহায়ক।
৩. নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার: রেলওয়ে নিরাপত্তা একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। রেল বাজেটে ট্রেনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা উন্নত করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি ও সরঞ্জাম ক্রয়ের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়।
৪. যাত্রীসুবিধা বৃদ্ধি: রেল বাজেটে যাত্রীদের সুবিধা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়। যেমন, স্টেশনে ও ট্রেনে আরামদায়ক আসন, শৌচালয়, ওয়েটিং রুম, এবং খাদ্য সরবরাহের ব্যবস্থা উন্নত করা।
৫. প্রযুক্তিগত উন্নয়ন: রেলওয়ে ব্যবস্থাকে আধুনিক প্রযুক্তির সাথে সংযুক্ত করার জন্য রেল বাজেটে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য বরাদ্দ দেওয়া হয়। এটি ট্রেনের গতি বৃদ্ধি, জ্বালানি দক্ষতা, এবং পরিচালনা ব্যবস্থা উন্নত করতে সাহায্য করে।
৬. পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ: রেল বাজেটে পরিবেশ বান্ধব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়। যেমন, বৈদ্যুতিক ট্রেন চালু করা, সৌরশক্তি ব্যবহার, এবং কার্বন নিঃসরণ কমানোর জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ।
রেল বাজেটের প্রক্রিয়া:
রেল বাজেট প্রণয়নের প্রক্রিয়া বেশ জটিল এবং এটি দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা, রেলওয়ের বর্তমান অবস্থা, এবং ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়। সাধারণত, রেলওয়ে মন্ত্রণালয় এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের মধ্যে সমন্বয়ের মাধ্যমে রেল বাজেট প্রস্তুত করা হয়। এটি সংসদে উপস্থাপন করা হয় এবং অনুমোদনের পর তা কার্যকর হয়।
রেল বাজেটের গুরুত্ব:
রেল বাজেট একটি দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রেলওয়ে পরিবহন খাতের মাধ্যমে বিপুল সংখ্যক মানুষের যাতায়াত এবং পণ্য পরিবহন সম্পন্ন হয়। এটি দেশের অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য এবং শিল্পায়নের জন্য অপরিহার্য। রেল বাজেটের মাধ্যমে রেলওয়ে ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণ করা যায়, যা দেশের সামগ্রিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
রেল বাজেটের চ্যালেঞ্জ:
রেল বাজেট প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের সময় বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। যেমন, অর্থের অভাব, প্রকল্প বাস্তবায়নে বিলম্ব, এবং রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক জটিলতা। এছাড়াও, রেলওয়ে ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষ জনবলের অভাবও একটি বড় চ্যালেঞ্জ।
উপসংহার:
রেল বাজেট একটি দেশের রেলওয়ে ব্যবস্থার উন্নয়ন ও আধুনিকীকরণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি রেলওয়ে অবকাঠামো, নিরাপত্তা, যাত্রীসুবিধা, এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ করে। রেল বাজেটের সঠিক পরিকল্পনা ও বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশের রেলওয়ে ব্যবস্থাকে আরও দক্ষ, নিরাপদ, এবং যাত্রীবান্ধব করা যায়, যা দেশের সামগ্রিক অর্থনৈতিক উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।