crossorigin="anonymous">     crossorigin="anonymous"> B.A 3rd Semester Bengali Major Long Question Answer Suggestion | Kalyani University 2025

B.A 3rd Semester Bengali Major Long Question Answer Suggestion | Kalyani University 2025

University of Kalyani Suggestion

ছন্দ, অলঙ্কার ও কাব্য জিজ্ঞাসা

Kalyani University B.A 3rd Semester Bengali Major Long Question Answers Suggestion 2025

Course Code: BEN-M-T-3

• এই সাজেশনের প্রশ্ন সংখ্যা 34 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজেশনেরর বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজেশনের প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.

এখানে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।

----ছন্দ----

*****1) প্রশ্ন. গদ্য ছন্দ বলতে কী বোঝো? এই ছন্দের বৈশিষ্ট্যাবলী যথোপযুক্ত উদাহরণসহ ব্যাখ্যা কর। ৫

গদ্য ছন্দ কী?

গদ্য ছন্দ হলো গদ্য রচনায় ব্যবহৃত একটি বিশেষ ধরনের ছন্দ। এটি পদ্য ছন্দের মতো কঠোর নিয়মবদ্ধ নয়, বরং এটি স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক ধারায় প্রবাহিত হয়। গদ্য ছন্দে শব্দের মাত্রা, পর্ব বা ধ্বনির সমন্বয় থাকে, তবে তা অতটা কাঠামোবদ্ধ নয়। গদ্য ছন্দের মূল উদ্দেশ্য হলো ভাষাকে সৌন্দর্য ও প্রাণবন্ততা দেওয়া, পাঠককে আকর্ষণ করা এবং বিষয়বস্তুকে সহজবোধ্য করে তোলা।

গদ্য ছন্দের বৈশিষ্ট্যাবলী:

১. স্বাভাবিকতা: গদ্য ছন্দের প্রধান বৈশিষ্ট্য হলো এর স্বাভাবিকতা। এটি কৃত্রিম বা জটিল নয়, বরং সহজ ও প্রাকৃতিক। গদ্য ছন্দে শব্দের ব্যবহার এমনভাবে করা হয় যে তা পাঠকের মনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে ধরা দেয়।

২. প্রবাহমানতা: গদ্য ছন্দে একটি ধারাবাহিক প্রবাহ থাকে। এটি পাঠককে একটানা টেনে নিয়ে যায়। এই প্রবাহমানতা গদ্য রচনাকে প্রাণবন্ত করে তোলে।

৩. ছন্দের নমনীয়তা: গদ্য ছন্দে কঠোর নিয়মের বাধ্যবাধকতা নেই। এটি লেখকের স্বাধীনতা দেয়। লেখক তার রচনায় প্রয়োজন অনুযায়ী ছন্দের পরিবর্তন করতে পারেন।

৪. ধ্বনির সৌন্দর্য: গদ্য ছন্দে ধ্বনির সৌন্দর্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। শব্দের মাধুর্য ও ধ্বনির সমন্বয় গদ্য রচনাকে আকর্ষণীয় করে তোলে।

৫. অলংকারের ব্যবহার: গদ্য ছন্দে অলংকারের ব্যবহার লক্ষণীয়। উপমা, উৎপ্রেক্ষা, রূপক ইত্যাদি অলংকারের মাধ্যমে গদ্য রচনা আরও সজীব ও প্রাণবন্ত হয়ে ওঠে।

উদাহরণসহ ব্যাখ্যা:

১. স্বাভাবিকতা: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গদ্য রচনায় গদ্য ছন্দের স্বাভাবিকতা সুস্পষ্ট। যেমন, "চোখের বালি" উপন্যাসের একটি অংশ: "বিহারী ললিতার মুখের দিকে চাহিয়া রহিল। ললিতা মুখ ফিরাইয়া লইল। বিহারী আর কিছু বলিল না।" এখানে শব্দের ব্যবহার সহজ ও স্বাভাবিক, যা পাঠককে স্বতঃস্ফূর্তভাবে আকর্ষণ করে।

২. প্রবাহমানতা: বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "কপালকুণ্ডলা" উপন্যাসের একটি অংশ: "নবকুমার দেখিলেন, একটি যুবতী কাপালিকের সহিত কথা কহিতেছে। যুবতীটি অতি সুন্দরী।" এখানে বাক্যগুলো একটির পর একটি ধারাবাহিকভাবে এসেছে, যা গদ্য ছন্দের প্রবাহমানতা নির্দেশ করে।

৩. ছন্দের নমনীয়তা: শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের "দেবদাস" উপন্যাসের একটি অংশ: "দেবদাস বলিল, 'পার্বতী, তুই যাইবি?' পার্বতী বলিল, 'যাইব।'" এখানে ছন্দের কোনো কঠোর নিয়ম নেই, বরং কথোপকথনের মাধ্যমে ছন্দের নমনীয়তা ফুটে উঠেছে।

৪. ধ্বনির সৌন্দর্য: কাজী নজরুল ইসলামের গদ্য রচনায় ধ্বনির সৌন্দর্য বিশেষভাবে লক্ষণীয়। যেমন, "আগুনের ফুলকি" গল্পের একটি অংশ: "আগুনের ফুলকি ছুটছে আকাশে, তারায় তারায় জ্বলছে আলো।" এখানে শব্দের ধ্বনি ও মাধুর্য গদ্য ছন্দের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করেছে।

৫. অলংকারের ব্যবহার: মীর মশাররফ হোসেনের "বিষাদসিন্ধু" উপন্যাসের একটি অংশ: "হাসান হোসেনের রক্তে রঞ্জিত হল মরুভূমি।" এখানে রূপক অলংকারের মাধ্যমে গদ্য ছন্দের সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে।

উপসংহার:

গদ্য ছন্দ গদ্য রচনার একটি অপরিহার্য অংশ। এটি গদ্যকে প্রাণবন্ত ও আকর্ষণীয় করে তোলে। গদ্য ছন্দের বৈশিষ্ট্যগুলো যথাযথভাবে ব্যবহার করে লেখক তার রচনাকে পাঠকের কাছে সহজবোধ্য ও আনন্দদায়ক করে তুলতে পারেন। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, কাজী নজরুল ইসলাম প্রমুখ সাহিত্যিকদের রচনায় গদ্য ছন্দের সার্থক প্রয়োগ লক্ষণীয়। গদ্য ছন্দের মাধ্যমে গদ্য রচনা শুধু তথ্যপূর্ণই নয়, সৌন্দর্য ও মাধুর্যেও ভরপুর হয়ে ওঠে।

*****2) প্রশ্ন. অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ আলোচনা কর। ৫/১০

অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দ বাংলা কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ছন্দ প্রকরণ। এটি মূলত মাত্রাবৃত্ত ছন্দের একটি বিশেষ রূপ, যেখানে মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয়ে ছন্দ গঠিত হয়। এই ছন্দের বৈশিষ্ট্য হলো এর নমনীয়তা এবং গতিময়তা, যা কবিতাকে প্রাণবন্ত ও সুরেলা করে তোলে। নিচে অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য উদাহরণসহ আলোচনা করা হলো:

অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দের বৈশিষ্ট্য:

১. মাত্রা ও অক্ষরের সমন্বয়: এই ছন্দে মাত্রাবৃত্ত ছন্দের মাত্রা গণনা পদ্ধতি এবং অক্ষরবৃত্ত ছন্দের অক্ষরভিত্তিক গঠন একসাথে ব্যবহৃত হয়। ফলে ছন্দটি মাত্রাবৃত্তের কাঠামো ধারণ করে, কিন্তু অক্ষরবৃত্তের মতো সুরেলা ও গতিশীল হয়।

২. নমনীয়তা: অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দে মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয় থাকায় কবিতার লাইনগুলিতে নমনীয়তা দেখা যায়। এটি কবিকে শব্দচয়ন এবং ছন্দ গঠনে স্বাধীনতা দেয়।

৩. গতিময়তা: এই ছন্দের একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো এর গতিময়তা। মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয় ছন্দটিকে প্রাণবন্ত করে তোলে, যা পাঠক বা শ্রোতাকে সহজেই আকর্ষণ করে।

৪. সুরেলা ধ্বনি: অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দে ধ্বনির মাধুর্য এবং সুরেলা গতি থাকে। এটি কবিতাকে শ্রুতিমধুর করে তোলে।

৫. উদাহরণ: বাংলা সাহিত্যে অনেক কবি অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দ ব্যবহার করেছেন। যেমন, কাজী নজরুল ইসলামের কবিতায় এই ছন্দের ব্যবহার দেখা যায়।

উদাহরণসহ আলোচনা:

কাজী নজরুল ইসলামের "বিদ্রোহী" কবিতাটি অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দের একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ। এই কবিতায় মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয়ে ছন্দ গঠিত হয়েছে, যা কবিতাটিকে গতিশীল এবং প্রাণবন্ত করে তুলেছে।

উদাহরণ:

বল বীর – বল উন্নত মম শির! শির নেহারি' আমারি, নত শির ওই শিখর হিমাদ্রির! এই লাইনগুলিতে মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয় দেখা যায়। প্রতিটি শব্দ এবং অক্ষর সঠিকভাবে ব্যবহৃত হয়েছে, যা ছন্দটিকে সুরেলা এবং গতিময় করে তুলেছে।

উপসংহার:

অক্ষরবৃত্ত বা মিশ্র কলাবৃত্ত ছন্দ বাংলা কবিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ ছন্দ প্রকরণ। এর মাত্রা এবং অক্ষরের সমন্বয় ছন্দটিকে নমনীয়, গতিময় এবং সুরেলা করে তোলে। কাজী নজরুল ইসলামের মতো কবিরা এই ছন্দ ব্যবহার করে বাংলা কবিতাকে সমৃদ্ধ করেছেন। এই ছন্দের বৈশিষ্ট্য এবং উদাহরণগুলি বাংলা কবিতার ছন্দ প্রকরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক তুলে ধরে।

-----অলংকার----

*****3) প্রশ্ন. 'বাজে পূরবীর ছন্দে রবির শেষ রাগিণীর বীণ' - অলংকার নির্ণয় করো। 5

উদ্ধৃত পংক্তিটি বাংলা সাহিত্যের একটি সুপরিচিত ও সৌন্দর্যমণ্ডিত পংক্তি। এখানে কবি একটি চমৎকার অলংকার ব্যবহার করেছেন, যা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। এই পংক্তিতে ব্যবহৃত অলংকারটি হলো "উপমা অলংকার"।

উপমা অলংকার কী?

উপমা অলংকার হলো এমন একটি অলংকার যেখানে একটি বস্তু বা বিষয়কে অন্য একটি বস্তু বা বিষয়ের সাথে সাদৃশ্য দেখানো হয়। উপমা অলংকারে সাধারণত চারটি উপাদান থাকে:

১. উপমেয়: যে বস্তু বা বিষয়ের সাথে তুলনা করা হয়।
২. উপমান: যে বস্তু বা বিষয়ের সাথে তুলনা করা হচ্ছে।
৩. সাধারণ ধর্ম: যে বৈশিষ্ট্যের জন্য তুলনা করা হয়।
৪. বাচক শব্দ: যে শব্দ দ্বারা তুলনা করা হয় (যেমন: মতো, সদৃশ, সমান ইত্যাদি)।

পংক্তির বিশ্লেষণ:

পংক্তিটি হলো: "বাজে পূরবীর ছন্দে রবির শেষ রাগিণীর বীণ"। এখানে কবি সূর্যের শেষ আলোকে (রবির শেষ রাগিণী) একটি বীণার সুরের সাথে তুলনা করেছেন। এই তুলনায় উপমা অলংকারের উপাদানগুলো নিম্নরূপ:

১. উপমেয়: রবির শেষ রাগিণী (সূর্যের শেষ আলো)।
২. উপমান:
বীণার সুর।
৩. সাধারণ ধর্ম: সৌন্দর্য ও মাধুর্য।
৪. বাচক শব্দ: ছন্দে (এখানে 'ছন্দে' শব্দটি তুলনা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে)।

অলংকারের প্রভাব:

উপমা অলংকারের মাধ্যমে কবি সূর্যের শেষ আলোর সৌন্দর্যকে বীণার সুরের সাথে তুলনা করে পাঠকের মনে একটি মধুর ও সুরেলা অনুভূতি সৃষ্টি করেছেন। এই তুলনা পাঠককে প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সংগীতের মাধুর্যের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম সম্পর্ক অনুভব করতে সাহায্য করে। এটি কবিতার শব্দচয়ন ও বাক্য গঠনে একটি সুরেলা প্রভাব ফেলে, যা পাঠকের মনে দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব রাখে।

সাহিত্যে উপমা অলংকারের গুরুত্ব:

উপমা অলংকার সাহিত্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এটি পাঠকের মনে একটি চিত্রকল্প সৃষ্টি করে এবং কবিতার ভাব ও আবেগকে আরও গভীর ও স্পষ্ট করে তোলে। উপমা অলংকারের মাধ্যমে কবি বা লেখক তার ভাবনা ও অনুভূতিকে আরও স্পষ্ট ও প্রাণবন্তভাবে প্রকাশ করতে পারেন। এটি পাঠককে কবিতার ভাবজগতে প্রবেশ করতে এবং কবির চিন্তা ও অনুভূতির সাথে একাত্ম হতে সাহায্য করে।

উপসংহার:

উদ্ধৃত পংক্তিতে কবি উপমা অলংকারের মাধ্যমে সূর্যের শেষ আলোকে বীণার সুরের সাথে তুলনা করে একটি মধুর ও সুরেলা চিত্রকল্প সৃষ্টি করেছেন। এই অলংকারের মাধ্যমে কবি প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সংগীতের মাধুর্যের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম সম্পর্ক স্থাপন করেছেন, যা পাঠকের মনে গভীর প্রভাব ফেলে। উপমা অলংকারের এই ব্যবহার কবিতার সৌন্দর্য ও গভীরতাকে আরও বৃদ্ধি করেছে এবং পাঠককে কবিতার ভাবজগতে প্রবেশ করতে সাহায্য করেছে।

এই পংক্তিটি বাংলা সাহিত্যের একটি উজ্জ্বল উদাহরণ, যেখানে অলংকারের সঠিক ব্যবহার কবিতার সৌন্দর্য ও গভীরতাকে আরও বৃদ্ধি করেছে। এটি পাঠককে কবিতার ভাব ও আবেগের সাথে একাত্ম হতে এবং প্রকৃতির সৌন্দর্য ও সংগীতের মাধুর্যের মধ্যে একটি সূক্ষ্ম সম্পর্ক অনুভব করতে সাহায্য করে।

*****4) প্রশ্ন. উদাহরণসহ সমাসোক্তি অলংকারের পরিচয় দাও।৫

Leave a Comment