এই ওয়েবসাইটে অল্প কিছু প্রশ্নোত্তর স্যাম্পেল হিসাবে আপলোড করা হয়েছে যদি তোমার মনে হয় সাজেশনটি BUY করতে পারো ।
• সাজেশন পিডিএফ পেজের পেজ সংখ্যা 62 টি।
• নিরক্ষরেখে বলতে পারি এই সাজসানের বাইরে কোন প্রশ্ন উত্তর আসবে না।
• ১০০% তোমরা কমন পাবে।
• এই সাজসানে প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর সিলেবাস অনুযায়ী এবং ইউনিট অনুযায়ী সাজানো রয়েছে ।
• তোমরা চাইলে খুব সহজে BUY করতে পারো।
• THANK YOU.
***1) প্রশ্ন: শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য কী?
উত্তর: সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী, শিক্ষা একটি সামাজিক দায়িত্ব। শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য বলতে বোঝায় সামাজিক ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি সংরক্ষণ করা, তাদের সমন্বয় সাধন করা, এবং সমাজের সার্বিক প্রগতি নিশ্চিত করা। সমাজ ছাড়া ব্যক্তির অস্তিত্ব নেই। তাই, সমাজের অগ্রগতির লক্ষ্যে শিক্ষার সমাজতান্ত্রিক লক্ষ্য নির্ধারণ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
***2) প্রশ্ন: শিক্ষাকে কি বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করা যেতে পারে? তোমার মতামত দাও।
উত্তর: শিক্ষাবিজ্ঞানের অন্তর্গত মনোবৈজ্ঞানিক ভিত্তি (Psychological Foundation) সম্পূর্ণভাবে এক ধরনের আচরণবাদী বিজ্ঞান। এখানে মানুষের শিক্ষার ক্ষেত্রে বিভিন্ন আচরণের বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণ, পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষা করা হয়। এই পরীক্ষাগুলি বিদ্যালয় বা শিক্ষা পরিবেশে যেমন সংগঠিত হয়, তেমনই পরীক্ষাগারেও হয়। এসব পরীক্ষার ফলাফলগুলি কার্যকরভাবে শিক্ষাবিজ্ঞানের ওপর প্রয়োগ করা হয়। বিজ্ঞান যেমন পর্যবেক্ষণ, পরীক্ষা এবং ফলাফল বিশ্লেষণের ওপর ভিত্তি করে, শিক্ষার মনোবৈজ্ঞানিক ভিত্তিও তেমনই বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরিচালিত হয়। তাই বলা যায়, শিক্ষার মনোবৈজ্ঞানিক ভিত্তির মধ্যে বিজ্ঞানের সকল বৈশিষ্ট্য বিদ্যমান থাকায় শিক্ষাকে বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করা যায়।
***3) প্রশ্ন: বিদ্যালয়ের প্রধান চারটি কাজ কী কী?
উত্তর: বিদ্যালয়ের প্রধান চারটি কাজ হল: 1. শিক্ষার্থীর বৌদ্ধিক বিকাশ ঘটানো: শিক্ষার্থীর মেধা ও জ্ঞান বৃদ্ধির মাধ্যমে তার বৌদ্ধিক উন্নতি সাধন করা। 2. শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটানো: শিক্ষার্থীর ব্যক্তিত্ব, সামাজিক দক্ষতা ও আত্মবিশ্বাসের বিকাশ ঘটানো। 3. শিক্ষার্থীর সৃজনাত্মক ক্ষমতার বিকাশ ঘটানো: শিক্ষার্থীর সৃজনশীলতা ও কল্পনাশক্তির বিকাশ ঘটানো। 4. শিক্ষার্থীর নৈতিক ও চারিত্রিক বিকাশ ঘটানো: শিক্ষার্থীর নৈতিকতা ও চারিত্রিক গুণাবলীর উন্নতি সাধন করা।
***4) প্রশ্ন: 'কারিকুলাম' (Curriculum) শব্দের ব্যুৎপত্তিগত অর্থ লেখ।
উত্তর: 'কারিকুলাম' শব্দটি ইংরেজি থেকে এসেছে, যা লাতিন শব্দ 'Currere' থেকে উদ্ভূত। 'Currere' শব্দের অর্থ হল 'দৌড়ের পথ' (Race Course)। এখানে শিক্ষাকে দৌড় প্রতিযোগিতার সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে। দৌড়ের মতো শিক্ষারও একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য থাকে, এবং সেই লক্ষ্য অর্জনের পথই হল পাঠক্রম। অর্থাৎ, ব্যুৎপত্তিগতভাবে 'কারিকুলাম' শব্দের অর্থ হল 'বিশেষ লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য দৌড়ের পথ'।
***5) প্রশ্ন: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষা বলতে কী বোঝায়?
উত্তর: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থা এমন একটি পদ্ধতি, যেখানে শিশু-শিক্ষার্থীদের মানসিক প্রবণতা, আগ্রহ, আকাঙ্ক্ষা এবং সহজাত ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে তাদের সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশের জন্য অবিরাম প্রচেষ্টা চালানো হয়। এই শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের স্বাধীনতা, সক্রিয় অংশগ্রহণ, অভিজ্ঞতার ব্যবহার, মনস্তাত্ত্বিক উন্নয়ন এবং শিক্ষক-শিক্ষার্থীর মধ্যে সুসম্পর্ক গঠন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
***6) প্রশ্ন: অধিবিদ্যা বলতে কী বোঝানো হয়?
উত্তর: অধিবিদ্যা, বা যা মেটাফিজিক্স নামে পরিচিত, দর্শনের একটি বিশেষ শাখা। এই শাখায় বিশ্ব এবং আমাদের অস্তিত্ব, সত্যের ধারণা, বস্তুর গুণাবলী, সময় ও স্থান, এবং সম্ভাবনার মতো বিষয়গুলোর দার্শনিক বিশ্লেষণ করা হয়। এই ধারার প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে অ্যারিস্টটলের নাম উল্লেখ করা হয়।
***7) প্রশ্ন: শিক্ষাক্ষেত্রে জ্ঞানতত্ত্বের দুটি ভূমিকা লেখ।
উত্তর:ক) জ্ঞানতত্ত্বের প্রকৃতি: জ্ঞানতত্ত্ব হলো দর্শনের একটি শাখা যা জ্ঞানের প্রকৃতি ও পরিধি নিয়ে আলোচনা করে। এটি মূলত 'জ্ঞান কী' এবং 'কীভাবে এটি অর্জিত হতে পারে' এ প্রশ্নগুলোর উত্তর খোঁজার চেষ্টা করে। শিক্ষাক্ষেত্রে জ্ঞানতত্ত্ব শিক্ষার্থীদের জানার এবং শেখার পদ্ধতিগুলো বোঝাতে সাহায্য করে। খ) জ্ঞানের পরিমাপ: জ্ঞানতত্ত্ব যেকোনো বিষয় বা সত্তা সম্পর্কে কী মাত্রায় জ্ঞান অর্জন করা যায় তা নিয়েও আলোচনা করে। এটি জ্ঞানের স্বরূপ বা প্রকৃতির দার্শনিক বিশ্লেষণ করে এবং সত্য, বিশ্বাস ও যাচাইকরণের ধারণার সাথে এর সম্পর্ক নির্ণয় করে। শিক্ষাক্ষেত্রে এই ভূমিকা শিক্ষার মান এবং পদ্ধতির মূল্যায়নে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
***8) প্রশ্ন: দর্শনের প্রধান শাখাগুলি কী কী?
উত্তর: দর্শনের প্রধান শাখাগুলি হলো: 1. জ্ঞানতত্ত্ব (Epistemology): এটি জ্ঞানের প্রকৃতি, উৎস, এবং সীমা নিয়ে আলোচনা করে।
2. নীতিশাস্ত্র (Ethics): এটি নৈতিকতা, সঠিক ও ভুলের ধারণা, এবং নৈতিক মূল্যবোধ নিয়ে আলোচনা করে। 3. যুক্তিবিদ্যা (Logic): এটি যুক্তির নিয়ম এবং সঠিক চিন্তার প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। 4. অধিবিদ্যা (Metaphysics): এটি বাস্তবতার প্রকৃতি, অস্তিত্বের মূল উপাদান, এবং বিশ্বব্রহ্মাণ্ডের গঠন নিয়ে আলোচনা করে।
***9) প্রশ্ন: বৌদ্ধ দর্শনের চারটি আর্য সত্য কী কী?
উত্তর: বৌদ্ধ দর্শনের মূল ভিত্তি হলো চারটি আর্য সত্য, যা গৌতম বুদ্ধ নির্ধারণ করেছিলেন। এই চারটি সত্য হলো: ১. দুঃখ: সমস্ত জগৎ দুঃখময়। ২. সমুদয়: দুঃখের কারণ আছে। ৩. নিরোধ: দুঃখের নিরোধ বা শেষ করা সম্ভব। ৪. মার্গ: দুঃখ নিরোধের একটি পথ বা উপায় আছে।
এই চারটি সত্যকে সম্মিলিতভাবে 'আর্য সত্য চতুষ্টয়' বলা হয়, যা বৌদ্ধ দর্শনের মূল ভিত্তি ও শিক্ষা।
***10) প্রশ্ন: জৈন দর্শনকে বহুত্ববাদ বলা হয় কেন?
উত্তর: জৈন ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক মতবাদ হল অনেকান্তবাদ, যা বহুত্ববাদের ধারণাকে তুলে ধরে। অনেকান্তবাদ অনুসারে, প্রত্যেক বস্তু অসংখ্য গুণের অধিকারী। জৈন মতবাদে, সত্তা স্থায়ী ও অস্থায়ী উভয় প্রকারই হতে পারে। সত্তার এই বৈচিত্র্যময় গুণাবলীর ধারণাই অনেকান্তবাদ নামে পরিচিত। জৈন মতে, "বস্তু অসীম গুণের অধিকারী" - 'অনন্তধর্মকং বস্ত।' এমন বস্তুতে স্থিতিশীল ও পরিবর্তনশীল অংশ উভয়ই বিদ্যমান। প্রতিটি বাস্তবতার তিনটি মাত্রা থাকে: উৎপত্তি, বিনাশ ও স্থায়িত্ব। এই কারণে, জৈন দর্শনকে বহুত্ববাদী দর্শন বলা হয়।
***11) প্রশ্ন: দুজন ভাববাদী দার্শনিকের নাম লেখ। অথবা দুজন ভারতীয় ও দুজন পাশ্চাত্য ভাববাদী দার্শনিকের নাম লেখ।
উত্তর: দুজন ভারতীয় ভাববাদী দার্শনিকের নাম - স্বামী বিবেকানন্দ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, মহাত্মা গান্ধী, শ্রী অরবিন্দ। দুজন পাশ্চাত্য ভাববাদী দার্শনিকের নাম - প্লেটো, ইমানুয়েল কান্ট, ফ্রয়েবেল, কমেনিয়াস প্রমুখ।
***12) প্রশ্ন: প্রকৃতিবাদী দার্শনিকদের দৃষ্টিকোণ থেকে শিক্ষার দুটি লক্ষ্য উল্লেখ কর ?
উত্তর:ক) প্রকৃতিবাদীদের মতে, শিক্ষার প্রধান লক্ষ্য হলো আত্মপ্রকাশ এবং আত্মসংরক্ষণ। খ) তাদের মতে, শিক্ষার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হলো ব্যক্তির স্বাভাবিক প্রবৃত্তি অনুসারে সুসংহত ও প্রগতিশীল বিকাশ সাধন করা।
***13) প্রশ্ন: প্রয়োগবাদী দর্শনের জনক কে? 'প্রয়োগবাদ' শব্দের উৎস কী?
উত্তর: প্রয়োগবাদী দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন জন ডিউই। অনেকের মতে, দার্শনিক মিল এবং বেন্থাম (Mill and Bentham) এর উপযোগিতাবাদ তত্ত্ব থেকেই প্রয়োগবাদ দর্শনের উত্থান ঘটেছে।
***14) প্রশ্ন: জৈন দর্শনের দুটি শিক্ষাগত প্রয়োগ লেখ।
উত্তর: ১. জৈন দর্শন মুক্তির পথকে গুরুত্ব দিয়ে শিক্ষার্থীর চরিত্র গঠনে প্রাধান্য দেয়, যা সার্থক জ্ঞান অর্জনের জন্য অপরিহার্য।
২. জৈন দর্শন শিক্ষার্থীকে মিথ্যা দর্শন ও মিথ্যা জ্ঞানের বন্ধন থেকে মুক্তির শিক্ষা প্রদান করে, যা আধুনিক জীবনে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
***15) প্রশ্ন: ব্যাপক অর্থে শিক্ষা কী বোঝায়?
উত্তর: শিক্ষা বলতে একটি বিস্তৃত ধারণা বুঝায়, যা মানুষের জ্ঞান, অনুভূতি এবং মানসিক বিকাশের সাথে জড়িত। এই প্রক্রিয়া শুধুমাত্র শ্রেণিকক্ষের পরিবেশে সীমাবদ্ধ নয়; বরং এটি বিভিন্ন নিয়ন্ত্রিত ও অনিয়ন্ত্রিত এবং প্রথাবহির্ভূত মাধ্যমের মাধ্যমে ঘটে।
***16) প্রশ্ন: 'জানার জন্য শিক্ষা' এর যে কোন দুটি গুরুত্ব লেখ।
উত্তর: ‘জানার জন্য শিক্ষা’ এর গুরুত্ব: ১) জ্ঞানমুক্তির পথ প্রদর্শক: প্রকৃত জ্ঞান মানুষের জীবনের আধ্যাত্মিক উন্নতি সাধনে সহায়ক। এটি মানুষকে বাহ্যিক সুখ, সাচ্ছন্দ্য এবং বিলাসিতা থেকে মুক্ত করে আধ্যাত্মিকতার এক নতুন দিগন্তে প্রবেশ করতে সাহায্য করে। ২) সঠিক পথে গমন: কার্যকরী জ্ঞান মানুষের মনে থাকা সকল নেতিবাচক ভাবনা যেমন: কলুষতা, হীনম্মন্যতা এবং স্বার্থপরতা দূর করে। এর ফলে, মানুষ জীবনের সঠিক দিকনির্দেশনা পায় এবং তার জীবনকে আলোকিত করে তোলে।
***17) প্রশ্ন: শিক্ষা দর্শনের দুটি নীতি লেখ।
উত্তর: শিক্ষা দর্শনের নীতিগুলি হল:
ক) শিক্ষা দর্শন উদ্দেশ্যমুখী ও আদর্শভিত্তিক।
খ) শিক্ষা দর্শন সমালোচনাধর্মী।
গ) শিক্ষা দর্শন একটি গতিশীল ভাবনাপ্রক্রিয়া ও প্রয়োগিক প্রক্রিয়া।
***18) প্রশ্ন: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল: ক) অবাধ স্বাধীনতা: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষাব্যবস্থায় শিশুকে অবাধ ও স্বাধীনতা দেওয়া হয়। শিশুরা খেলবে, দৌড়াবে, নানা প্রশ্ন করবে—এটাই তো তাদের জীবন। শিশুর দায়িত্ববোধ ও আগ্রহের উপর কোনো হস্তক্ষেপ করা চলবে না; সে তার সামর্থ্য অনুযায়ী কাজ করবে। খ) সক্রিয়তার মাধ্যমে শেখা: শিশুকেন্দ্রিক শিক্ষার আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল সক্রিয়তার মাধ্যমে শেখা। শিক্ষার্থী নিষ্ক্রিয়ভাবে শিক্ষাগ্রহণ করবে না; শিক্ষার্থী সক্রিয়তার সাথে, অর্থাৎ বুনিয়াদি শিক্ষার ভিত্তিতে শিক্ষা গ্রহণ করবে।
***19) প্রশ্ন: আদর্শ শিক্ষকের দুটি গুণাবলী লেখ।
উত্তর:(১) সমাজসেবামূলক মনোভাব: একজন আদর্শ শিক্ষক কখনোই নিজের কাজের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থাকেন না। তিনি সমাজের বৃহত্তর কল্যাণের জন্য কাজ করতে উৎসাহী হন এবং সমাজসেবামূলক আদর্শে অনুপ্রাণিত হন। তার কাজের মাধ্যমে সমাজের উন্নয়নে অবদান রাখার চেষ্টা করেন। (২) রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য: একজন আদর্শ শিক্ষক সর্বদা তার দেশের উন্নয়ন সম্পর্কে সচেতন থাকেন এবং রাষ্ট্রের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করেন। তিনি দেশের স্বার্থের পরিপন্থী কোনো কাজ করেন না, বরং রাষ্ট্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যান।
***20) প্রশ্ন: পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যক্রমের মধ্যে দুটি পার্থক্য লেখ।
উত্তর:পাঠ্যসূচি ও পাঠ্যক্রমের মধ্যে পার্থক্য:
আমরা প্রায়ই 'পাঠ্যসূচি' এবং 'পাঠ্যক্রম' শব্দ দুটি একে অপরের পরিবর্তে ব্যবহার করি, কিন্তু আসলে এদের মধ্যে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পার্থক্য রয়েছে। ১. পাঠ্যক্রমের ব্যাপ্তি: পাঠ্যক্রম একটি ব্যাপক ধারণা, যা শিক্ষার বিভিন্ন দিক, কার্যক্রম, এবং উপকরণকে অন্তর্ভুক্ত করে। অপরদিকে, পাঠ্যসূচি তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ, যা মূলত নির্দিষ্ট বই এবং পাঠ্যবিষয়গুলোর উপর কেন্দ্রিত।
২. উপকরণের অন্তর্ভুক্তি: পাঠ্যক্রমে শিক্ষণ প্রক্রিয়ার সব ধরনের উপকরণ এবং কার্যক্রম অন্তর্ভুক্ত হয়, কিন্তু পাঠ্যসূচি সাধারণত বই ও পাঠ্যবিষয়গুলির প্রতি বেশি মনোযোগ দেয়।
***21) প্রশ্ন: আপনার মতে, একটি আদর্শ বিদ্যালয়ের দুটি মূল দর্শন কী হওয়া উচিত?
উত্তর: আমি বিশ্বাস করি, একটি আদর্শ বিদ্যালয়ের দুটি মৌলিক দর্শন হতে পারে: ১. তাত্ত্বিক দর্শন: এই দর্শন শিক্ষার্থীদের মৌলিক জ্ঞান এবং চিন্তাভাবনার জন্য একটি দৃঢ় ভিত্তি তৈরি করে। ২. ব্যবহারিক দর্শন: এই দর্শন শিক্ষার্থীদের বাস্তব জীবনের সমস্যার সমাধানে দক্ষতা অর্জনে সহায়তা করে, যাতে তারা তাত্ত্বিক জ্ঞানকে বাস্তবায়িত করতে সক্ষম হয়।
***22) প্রশ্ন: জ্ঞান বিদ্যার দুটি প্রকৃতি লেখ।
উত্তর: জ্ঞানবিদ্যার দুটি মৌলিক প্রকৃতি বা বৈশিষ্ট্য হল: (ক) প্রথমত, এটি বিবেচনা করা হয় যে, কোন ধরনের জ্ঞান অর্জন সম্ভব এবং যদি তা সম্ভব হয়, তবে কোন ধরনের জ্ঞানটি সম্ভব হতে পারে। (খ) দ্বিতীয়ত, এটি প্রশ্ন ওঠে যে, কিছু মানুষের জ্ঞান কি স্বাভাবিকভাবে উদ্ভূত হয় (যেমন, জন্মের সময় থেকে) বা সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ জ্ঞান কি অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জিত হয়।
***23) প্রশ্ন: ভারতীয় দর্শন কী?
উত্তর: ভারতীয় দর্শন হল ভারতীয় উপমহাদেশে বিকাশিত একটি দার্শনিক ঐতিহ্য। এই ঐতিহ্যের মধ্যে বিভিন্ন দার্শনিক চিন্তার ভিন্নতা থাকা সত্ত্বেও, একটি নৈতিক ও আধ্যাত্মিক সংযোগ দৃশ্যমান। ধর্ম ও দর্শনের মধ্যে গভীর সম্পর্ক থাকার কারণে আধ্যাত্মিকতা ভারতীয় দর্শনের একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য। এই দর্শনের প্রতিষ্ঠাতা হলেন শংকর। মূল ধারার হিন্দু দর্শনের ছয়টি প্রধান শাখা রয়েছে, যেগুলো একত্রে "ষড়দর্শন" নামে পরিচিত। এগুলো হল: সাংখ্য, যোগ, ন্যায়, বৈশেষিক, মীমাংসা এবং বেদান্ত।
***24) প্রশ্ন: বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থায় বেদান্ত দর্শনের দুটি প্রাসঙ্গিকতা লেখ।
উত্তর: বর্তমান যুগের শিক্ষাব্যবস্থায় বেদান্ত দর্শন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করেছে। প্রথমত, বেদান্তের মূল শিক্ষা 'আত্মোপলব্ধি' আমাদের ব্যক্তিগত এবং সামাজিক জীবনে গভীর অন্তর্দৃষ্টি প্রদান করে। এটি আমাদের উদ্বিগ্ন জীবনে একটি স্থিরতা এনে দেয় এবং আমাদেরকে আধ্যাত্মিক জ্ঞান অর্জনের মাধ্যমে সমৃদ্ধির পথ দেখায়। দ্বিতীয়ত, বেদান্ত দর্শন বিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতার মধ্যে একটি সমন্বয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব করে। আধুনিক শিক্ষা সিস্টেমে যেহেতু প্রযুক্তি ও বিজ্ঞানের গুরুত্ব রয়েছে, সেহেতু বেদান্তের আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গি মানবিক মূল্যবোধের বিকাশে সহায়তা করে। এর ফলে, সমাজে এক উন্নত, সমৃদ্ধ ও সঙ্গতিপূর্ণ জীবন গঠনে সাহায্য করে, যা মানবজাতির অস্তিত্ব রক্ষায় অপরিহার্য।
এই দুই প্রাসঙ্গিকতা আমাদের বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী এবং সহনশীল করে তুলতে পারে।
***25) প্রশ্ন: প্রকৃতিবাদ দর্শনের দুটি প্রকারভেদ লেখ।
উত্তর: ভারতীয় দর্শনে প্রকৃতিবাদ দর্শনের দুটি প্রকারভেদ হলো-
ক) বৈশেষিক দর্শন,
খ) ন্যায় দর্শন,
গ) চার্বাক দর্শন।
***26) প্রশ্ন: আশ্রমিক শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর: ১) ভারতীয় নীতিতত্ত্বে আশ্রমিক শিক্ষা একটি জীবনের অধ্যায় বা পর্যায়ের শিক্ষা বোঝায়। বেদে উল্লেখিত চারটি প্রধান পর্যায় হলো: 1.ব্রহ্মচর্য: শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা ও আত্মসংযমের পর্যায়। 2.গৃহস্থ: সামাজিক দায়িত্ব গ্রহণের পর্যায়। বনপ্রস্থ: আস্তে আস্তে দুনিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে আত্ম-অনুসন্ধানের পর্যায়। 3.সন্ন্যাস: সব কিছুর ত্যাগ করে আল্লাহর কাছে ফিরে যাওয়ার পর্যায়।
২) শিক্ষার্থীরা গুরুগৃহ বা আশ্রমে অবস্থান করে বিভিন্ন শিক্ষা গ্রহণ করত। প্রত্যেকটি আশ্রমে আলাদা আলাদা কর্তব্য পালন করার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে, যা আশ্রমিক শিক্ষার মূল ভিত্তি। এই সমস্ত কর্তব্য পালনের মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা পরবর্তী আশ্রমের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে, যা উচ্চ শিক্ষার দিগন্তে প্রবেশের পথ প্রশস্ত করে।
***27) প্রশ্ন: আশ্রমিক শিক্ষার দুটি বৈশিষ্ট্য লেখ।
উত্তর:১. ফ্রেয়ার মনে করেন যে শিক্ষা অবশ্যই সমালোচনামূলক সচেতনতার ভিত্তিতে গড়ে উঠতে হবে। এটি 'মানবিক' এবং শিক্ষার্থীদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক বিকাশের ওপর গুরুত্ব দেয়। তিনি শিক্ষার্থীদের উৎসাহিত করেন যাতে তারা নিজেদের এবং সমাজকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য প্রস্তুত হয়। ২. ফ্রেয়ার ক্ষমতা, নিপীড়ন, বিবেক, মানবীকরণ এবং মুক্তির ধারণাগুলির প্রতি শিক্ষা প্রদান করেন। তিনি যুক্তি দেন যে ঐতিহ্যবাহী শিক্ষাব্যবস্থায় শিক্ষার্থীদের 'অমানবিক' করে ফেলা হচ্ছে, এবং এজন্য একটি নতুন শিক্ষাগত মডেলের প্রয়োজন। এর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা নিজেদের মানবতা পুনরুদ্ধার করতে পারে এবং একটি মুক্তির পথ খুঁজে পায়।
***27) প্রশ্ন: যোগ এবং সাংখ্য দর্শনের জনক কারা?
উত্তর:যোগ দর্শন: যোগ দর্শনের জনক হলেন মহর্ষি পতঞ্জলি। সাংখ্য দর্শন: সাংখ্য দর্শনের জনক হলেন ঋষি কপিল।
***29) প্রশ্ন: জন ডিউই-এর মতে বিদ্যালয় কী?
উত্তর: জন ডিউই-এর মতে, বিদ্যালয় একটি সমাজের অপরিহার্য অংশ এবং এর সংস্থাপনা সমাজজীবনের একটি সহজ, সুন্দর ও সুস্থ প্রতিচ্ছবি হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের পরিবেশ হবে সরল, সুন্দর ও সুস্থ। ডিউই-এর মতে, বিদ্যালয় হবে – "Purified, Simplified, Graded Better-balanced, Vitalized Society"। তিনি মনে করেন, গৃহের স্নেহ ও নিরাপত্তাবোধ বিদ্যালয়েও থাকতে হবে। বিদ্যালয়ের আন্তরিক পরিবেশে শিশুরা প্রতিযোগিতা, সহযোগিতা, বিরোধ ও সহ্যের মাধ্যমে সত্য নীতিগুলি জানবে ও শিখবে।
***30) প্রশ্ন: সামাজিকীকরণে সাহায্যকারী দুটি সংস্থার নাম উল্লেখ কর।
উত্তর: জন ডিউই-এর মতে, বিদ্যালয় একটি সমাজের অপরিহার্য অংশ এবং এর সংস্থাপনা সমাজজীবনের একটি সহজ, সুন্দর ও সুস্থ প্রতিচ্ছবি হওয়া উচিত। তিনি বলেন, বিদ্যালয়ের পরিবেশ হবে সরল, সুন্দর ও সুস্থ। ডিউই-এর মতে, বিদ্যালয় হবে – "Purified, Simplified, Graded Better-balanced, Vitalized Society"। তিনি মনে করেন, গৃহের স্নেহ ও নিরাপত্তাবোধ বিদ্যালয়েও থাকতে হবে। বিদ্যালয়ের আন্তরিক পরিবেশে শিশুরা প্রতিযোগিতা, সহযোগিতা, বিরোধ ও সহ্যের মাধ্যমে সত্য নীতিগুলি জানবে ও শিখবে।
***31) প্রশ্ন: সামাজিকীকরণে সাহায্যকারী দুটি সংস্থার নাম উল্লেখ কর।
উত্তর: সামাজিকীকরণে সাহায্যকারী দুটি সংস্থা হলো - ক) পরিবার, খ) বিদ্যালয়, গ) ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান, ঘ) আইন প্রভৃতি।